শের আলী সরদার: বাংলাদেশের ফুলের বিপ্লবের জনক
বাংলাদেশের ফুলের চাষাবাদ ও বাণিজ্যিকরণের ইতিহাসে শের আলী সরদারের নাম অমরত্ব অর্জন করেছে। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা গ্রামের এই ব্যক্তি ১৯৮২ সালে রজনীগন্ধা ফুলের চাষের মাধ্যমে দেশে ফুল চাষের এক নতুন যুগের সূচনা করেন। তাঁর প্রচেষ্টার ফলেই আজ যশোরের গদখালী ফুলের রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
১৯৮২ সালে মাত্র ৩০ শতক জমিতে শুরু হওয়া এই ফুল চাষের যাত্রা আজ বিস্তৃত হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে। শুধু রজনীগন্ধা নয়, গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিউলাস, জিপসি, রডস্টিক, কেলেনডোলা, চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুলের চাষ এখন গদখালীর বৈশিষ্ট্য। শের আলী সরদারের উদ্যোগের ফলে যশোরের ৬,০০০ এরও বেশি কৃষক এখন ফুল চাষে জড়িত এবং দেশের ৭০-৭৫ ভাগ ফুলের চাহিদা পূরণ হয় যশোর থেকে। গদখালীর পাইকারি ফুল বাজারে প্রতিদিনই কোটি কোটি টাকার ফুলের লেনদেন হয়। বিশেষ দিবসগুলিতে, যেমন ভালোবাসা দিবস, এই লেনদেন আরও বহুগুণ বেড়ে যায়।
শুধুমাত্র বাণিজ্যিক সাফল্য নয়, শের আলী সরদারের কাজ দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তিনি একজন সাধারণ কৃষক থেকে দেশের ফুল চাষের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তাঁর সফলতা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে অন্যান্য কৃষকদের জন্য, যার ফলে যশোরের অর্থনীতি ব্যাপক উন্নয়ন লাভ করেছে। গদখালী এখন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, শুধুমাত্র সুন্দর ফুলের মাঠের জন্য নয়, বরং শের আলী সরদারের অসাধারণ সাফল্যের কাহিনীর জন্যও।