শম্ভু

আপডেট: ৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১:৩৫ পিএম

শম্ভু নামটি বহু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত হওয়ায়, এখানে শুধুমাত্র শম্ভু মিত্র সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। শম্ভু মিত্র (২২ আগস্ট ১৯১৫ - ১৯ মে ১৯৯৭) ছিলেন বাংলা তথা ভারতীয় নাট্যজগতের এক কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব, স্বনামধন্য আবৃত্তিশিল্পী এবং চলচ্চিত্র অভিনেতা। কলকাতার ভবানীপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পৈতৃক নিবাস ছিল হুগলি জেলার কলাছাড়া গ্রামে। বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হলেও কলেজের পাঠ শেষ করেননি। ১৯৩৯ সালে কলকাতার রঙ্গমহলে অভিনয়ের মাধ্যমে বাণিজ্যিক নাট্যমঞ্চে তার পদার্পণ। পরবর্তীতে মিনার্ভা ও অন্যান্য নাট্যদলে অভিনয় করেন।

১৯৪৪ সালে বামপন্থী ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে ভারতীয় গণনাট্য সংঘে যোগ দেন। এই সংঘের মাধ্যমে বিজন ভট্টাচার্যের 'নবান্ন' নাটকের প্রযোজনায় ও অভিনয়ে অংশ নিয়ে তিনি নাট্যজগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ১৯৪৮ সালে তিনি নিজের নাট্যদল 'বহুরূপী' প্রতিষ্ঠা করেন। বহুরূপী বাংলা থিয়েটারে গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনের পথিকৃৎ ভূমিকা পালন করে। এই নাট্যদলের মাধ্যমে শম্ভু মিত্র সংগঠক, অভিনেতা ও নাট্য-নির্দেশক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। সফোক্লিসের 'রাজা অয়দিপাউস', রবীন্দ্রনাথের 'রক্তকরবী', 'রাজা', 'চার অধ্যায়', ইবসেনের 'পুতুল খেলা' এবং 'দশচক্র' সহ অনেক উল্লেখযোগ্য নাটকের প্রযোজনা ও পরিচালনার সাথে তিনি জড়িত ছিলেন।

শম্ভু মিত্র রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। একজন আবৃত্তিকার ও গদ্য-পাঠক হিসাবেও তিনি প্রশংসিত ছিলেন। প্রখ্যাত অভিনেত্রী তৃপ্তি মিত্র তাঁর সহধর্মিণী এবং শাঁওলী মিত্র তাঁর কন্যা। নাট্যচর্চায় অসামান্য অবদানের জন্য তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি, সঙ্গীত-নাটক একাডেমীর ফেলোশিপ, পদ্মভূষণ উপাধি (১৯৭০), ম্যাগসেসাই পুরস্কার (১৯৭৬) এবং চলচ্চিত্রের জন্য কার্লোভিভারি পুরস্কার লাভ করেন। চলচ্চিত্রেও অভিনয় ও নির্দেশনায় তিনি সাফল্য অর্জন করেন। ১৯৯৭ সালের ১৯ মে কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়। তার রচিত উল্লেখযোগ্য নাটক 'চাঁদ বণিকের পালা'। আরও অনেক নাটক ও ছোটোগল্প তিনি রচনা করেছেন। যথেষ্ট তথ্য না থাকায় শম্ভু নামটি নিয়ে অন্যান্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আমরা পরবর্তীতে আপনাকে জানাব।

মূল তথ্যাবলী:

  • শম্ভু মিত্র বাংলা ও ভারতীয় নাট্যজগতের এক কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
  • তিনি বহুরূপী নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিখ্যাত নাট্যকার ও পরিচালক ছিলেন।
  • তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন এবং আবৃত্তিশিল্পী ও চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন।
  • নাট্য ও সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি পদ্মভূষণ এবং ম্যাগসেসাই পুরস্কার সহ অনেক সম্মাননা লাভ করেছেন।
  • তার উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে 'চাঁদ বণিকের পালা' সবচেয়ে বিখ্যাত।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।