রাইয়ান রহমান: এক নবীন পাওয়ারলিফটারের অসাধারণ সাফল্য
আন্তর্জাতিক পাওয়ারলিফটিং অঙ্গনে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দিয়েছেন একজন নবীন তারকা, রাইয়ান রহমান। ২০১৮ সালে মোমিন এইচ রন এর হাত ধরে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়ারলিফটিং শুরু হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে এই খেলায় প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা গড়ে উঠছে। রাইয়ান তাদের মধ্যে অন্যতম। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের জন্য অভূতপূর্ব সাফল্য এনে দিয়েছেন।
২০২২ সালের আন্তর্জাতিক পাওয়ারলিফটিং ফেডারেশন (আইপিএফ) আয়োজিত 'ওয়ার্ল্ড ক্লাসিক অ্যান্ড ইকুইপড সাব-জুনিয়র অ্যান্ড জুনিয়র পাওয়ারলিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপ' প্রতিযোগিতায় ৫৯ কেজি ওজন শ্রেণীতে অংশগ্রহণ করে তিনি স্কোয়াটে রৌপ্য পদক এবং ডেডলিফটে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেন। তুরস্কের ইস্তানবুলে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ প্রথমবার অংশগ্রহণ করে। রাইয়ানের মোট ৪৫২.৫ কেজি ওজন উত্তোলনের ফলে তিনি চতুর্থ স্থান অর্জন করেন। এই প্রতিযোগিতায় আমেরিকা, ব্রাজিল, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, মেক্সিকো, সাউথ আফ্রিকা, জাপানসহ ৯টি দেশের ১২ জন পাওয়ারলিফটার অংশগ্রহণ করে।
রাইয়ানের পাওয়ারলিফটিংয়ে আগ্রহের শুরু ছোটবেলায়। তার বড় ভাইয়ের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ দেখে এবং শারীরিক ফিটনেসের জন্য তিনি ক্লাস এইটে পড়াকালীন জিমে যোগদান করেন। সেখানে একজন ট্রেইনার তাহসিন আলীর সাথে পরিচয় হলে তার পাওয়ারলিফটিং এর প্রতি আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। তাহসিন আলীই তার প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ন্যাশনাল পাওয়ারলিফটিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেন রাইয়ান। ২০২১ সালে একই প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত অনুশীলন করে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্য অর্জন করেন। তুরস্কে যাওয়ার পূর্বে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা ও প্রস্তুতির অভাব থাকা সত্ত্বেও তিনি চমৎকার সাফল্য অর্জন করেন।
রাইয়ান বর্তমানে ম্যানগ্রোভ কলেজে ‘এ’ লেভেলে পড়াশোনা করছেন। তিনি খাবার-দাবারের ব্যাপারেও বেশ সচেতন, ক্যালরি মেপে খাওয়ার অভ্যাস রপ্ত করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
রাইয়ানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রয়েছে অপেন পর্যায়ে খেলা এবং আধুনিক সরঞ্জাম সমৃদ্ধ জিম খোলা। এছাড়াও, এ বছর ডিসেম্বরে দুবাইতে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করবেন।
রাইয়ানের এই সাফল্যে গর্বিত তার পরিবার এবং কোচ। বাংলাদেশ পাওয়ারলিফটিং এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোমিন এইচ রন জানান, রাইয়ানের সাফল্য অন্যান্য তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।