বিজয়: একটি ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক ধারণা
বিজয় শব্দটির অর্থ বিজয়, জয়লাভ। হিন্দু পুরাণে বিজয় নামে একটি দিব্য ধনুকের কথা উল্লেখ আছে। এই ধনুকটি দেবতাদের স্থপতি বিশ্বকর্মা ইন্দ্রের জন্য তৈরি করেছিলেন। পুরাণ অনুসারে, ইন্দ্র এই ধনুক ব্যবহার করে অসংখ্য অসুরকে পরাজিত করেছিলেন। পরবর্তীতে, ইন্দ্র এই ধনুকটি পরশুরামকে দান করেন। পরশুরাম এই ধনুক ব্যবহার করে ক্ষত্রিয়দের অত্যাচার থেকে পৃথিবীকে মুক্তি দিয়েছিলেন বলে বর্ণনা করা হয়। মহাভারতে বলা হয়েছে, রুক্মী নামে একজন বীর এই ধনুকের অধিকারী ছিলেন। তিনি এই ধনুক দিয়ে অসুরদের পরাজিত করেছিলেন এবং পৃথিবীর বিভিন্ন সম্পদ অর্জন করেছিলেন। মহাভারত অনুসারে, পরশুরাম তাঁর শিষ্য কর্ণকে বিজয় ধনুকসহ অন্যান্য আস্ত্র দান করেছিলেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের ১৭তম দিনে কর্ণ অর্জুনের সাথে যুদ্ধে এই ধনুক ব্যবহার করেন। বিজয় ধনুককে বজ্রপাতের মতো শব্দ এবং সমগ্র বিশ্বকে ভীত করার ক্ষমতা সম্পন্ন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
বিজয় শব্দটি শুধুমাত্র পৌরাণিক ধনুকের জন্য নয়, বিভিন্ন প্রসঙ্গেও ব্যবহৃত হয়। বাংলা সাহিত্যে বিজয় গুপ্ত নামে একজন বিখ্যাত কবি ছিলেন, যিনি পদ্মাপুরাণ নামক মনসামঙ্গল কাব্য রচনা করেছিলেন। তিনি ১৫শ শতকে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার কাব্যে তৎকালীন বাংলার ঐতিহাসিক ও সামাজিক ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায়।
বিজয় দিবস বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস। এটি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে বাংলাদেশের বিজয় উৎসবের দিন। এছাড়াও, বিজয় কেতন জাদুঘর ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এই জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক সামগ্রী সংরক্ষিত আছে।