বারহাট্টা উপজেলা

আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮:০৭ এএম
নামান্তরে:
Barhatta Upazila
বারহাট্টা উপজেলা

বারহাট্টা উপজেলা: নেত্রকোণার একটি ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমাহার

বাংলাদেশের নেত্রকোণা জেলার অন্তর্গত বারহাট্টা উপজেলা, ঐতিহাসিক গুরুত্ব, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং কৃষি সম্পদের জন্য পরিচিত। ২২১.৫০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলাটি উত্তরে কলমাকান্দা উপজেলা ও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা, দক্ষিণে আটপাড়া ও মোহনগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে মোহনগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা এবং পশ্চিমে নেত্রকোণা সদর উপজেলা দ্বারা বেষ্টিত। ২৪°৫১´ থেকে ২৫°০০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৪৬´ থেকে ৯১°০০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত এই উপজেলা নেত্রকোণা জেলা শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে।

ঐতিহাসিক পটভূমি:

ষোড়শ শতকের মুঘল আমল থেকে বারহাট্টার ইতিহাসের সন্ধান পাওয়া যায়। ১৫ই জুন, ১৯০৬ সালে পূর্ববঙ্গ ও আসাম গেজেটের বিজ্ঞাপন অনুসারে নোটিফিকেশন নং ৬৬৭৬ জে বারহাট্টা থানা প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৩ সালের ২ জুলাই এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বারহাট্টা উপজেলা পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতার শিকার হয়। অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশের মুক্তির জন্য প্রাণের বিনিময় করেছেন। ৮ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে বারহাট্টা উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। বারহাট্টা নামকরণের ইতিহাস ১৮ শতকের শুরু এবং ১৭ শতকের শেষের দিকে নির্দিষ্ট করা হয়। ঐতিহাসিক মতে, টিপু শাহ নেতৃত্বাধীন পাগলপন্থী আন্দোলনকারীদের উপস্থিতির কারণেই ব্রিটিশরা এখানে সেনা ছাউনি স্থাপন করে এবং “বারহাট্টা” নামের উৎপত্তি হয় বলে মনে করা হয়।

ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:

বারহাট্টা উপজেলা কংশ নদীর তীরে অবস্থিত। এছাড়াও এখানে বিষনাইল, ধনাইখালী, লারখালী, গোলামখালী, রাঙ্গাধাইর, কাউনাই, গোরাউৎরা, ধালেশ্বরী প্রভৃতি নদী রয়েছে। ২০২১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী, উপজেলার জনসংখ্যা ১,৮০,৪৪৯। পুরুষ ৯০,৫৭৬ এবং মহিলা ৮৯,৮৭৩। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৮২০ জন।

অর্থনীতি:

বারহাট্টার অর্থনীতি প্রধানত কৃষি নির্ভর। ধান, পাট, গম, আলু, কুমড়া, সরিষা প্রভৃতি প্রধান ফসল। আম, কাঁঠাল, কলা, জাম, লিচু, পেয়ারা প্রভৃতি ফল উৎপাদন হয়। এছাড়াও, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল এবং মৎস্য চাষ এই অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। ছোট ও মাঝারি আকারের ক্ষুদ্র শিল্পও এখানে গড়ে উঠেছে।

শিক্ষা ও সংস্কৃতি:

বারহাট্টা উপজেলায় ৩টি কলেজ এবং অসংখ্য বিদ্যালয় রয়েছে। দেশীয় খেলাধুলা যেমন হা-ডু-ডু, বলি, দারিয়াবান্দা, গোল্লাছুট, মইল্লা, ষাড়ের লড়াই, ঘুড়ি উড়ানো, এবং আন্তর্জাতিক খেলাধুলা যেমন ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল প্রচলিত। এছাড়াও গাজী-কালুর পালা, রামায়ণ পালা এবং মাঝে মাঝে বাউল গানের আসর অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখযোগ্য স্থান:

বারহাট্টা উপজেলায় সাউদপুরের ভগ্ন মুঘল আমলের ইমারত, আমঘাইল পিরিজপুর গ্রামের জোড়াপুকুর উল্লেখযোগ্য।

আরও তথ্য:

বারহাট্টা উপজেলার সম্পূর্ণ ইতিহাস, বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য আমরা আপনাকে আপডেট করে রাখব।

মূল তথ্যাবলী:

  • নেত্রকোণা জেলার একটি উপজেলা
  • ২২১.৫০ বর্গ কিমি আয়তন
  • ১৯০৬ সালে থানা, ১৯৮৩ সালে উপজেলা
  • মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক গুরুত্ব
  • কৃষি প্রধান অর্থনীতি

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।