বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট (বিজেএইচএম): একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট (বিজেএইচএম) হল বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য হিন্দু ধর্মীয় সংগঠন। ২০০৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটি দেশের ২৩টি ছোট-বড় হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনের একটি মহাজোট। বিজেএইচএম নিজেকে অরাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করে, যদিও এর রাজনৈতিক প্রভাব এবং কর্মকাণ্ডের বিষয়টি প্রায়শই আলোচনার মধ্যে থাকে।
এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য হলো হিন্দু সমাজের কল্যাণ, হিন্দু ধর্মের রক্ষা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অধিকার আদায়। বিজেএইচএম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেছে, যার মধ্যে সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রণালয় স্থাপন, হিন্দুদের জন্য সংরক্ষিত আসন, হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংশোধন এবং হিন্দু ধর্মীয় উৎসবের দিনে সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি অন্যতম। ২০২১ সালে সংগঠনটি প্রতিটি উপজেলায় একটি মডেল মন্দির নির্মাণের দাবি জানিয়েছিল।
তবে, বিজেএইচএমের কার্যকলাপ নিয়েও কিছু সমালোচনা রয়েছে। সংগঠনের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উসকানি, ভারতীয় ভাষায় ব্যানার ব্যবহার, বক্তৃতার শেষে “ভারত মাতা কি জয়” স্লোগান ব্যবহার এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হিন্দু সদস্যদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির মত অভিযোগ রয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে যে, তারা ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম এবং “হিন্দু আইন প্রণয়নে নাগরিক উদ্যোগ” নিয়ে অপপ্রচার চালায়। তারা হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংশোধনের বিরোধী সংগঠন 'মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন' কে হিন্দুধর্ম ও সমাজ বিরোধী বলে অভিহিত করেছে।
বিজেএইচএম-এর বর্তমান সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায় এবং নির্বাহী মহাসচিব ও মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে। সংগঠনের যুব ও ছাত্র শাখাও রয়েছে। বিজেএইচএম বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তাদের কার্যকলাপ এবং দাবি-দাওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃশ্যপটে প্রভাব ফেলে। তবে, তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিদ্যমান বিতর্ক এই প্রভাবের মূল্যায়নকে জটিল করে তোলে।