বাংলাবাজার: ঢাকার একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান
ঢাকার অতীতের সাক্ষী, বাংলাবাজার শহরের প্রাচীনতম এলাকাগুলির মধ্যে একটি। মুঘল আমলের আগে থেকেই এর অস্তিত্ব ছিল বলে অনুমান করা হয়। কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন, এটি 'বাঙ্গালা' শহরের কেন্দ্রস্থল ছিল, যা বিভিন্ন অভিযাত্রী তাদের লেখায় উল্লেখ করেছেন। অন্যরা মনে করেন সুলতানি যুগে 'বাঙ্গালা' শব্দটি জনপ্রিয় হওয়ার সাথে সাথে বাংলাবাজারের প্রতিষ্ঠা ঘটে। ১৫০৬ খ্রিস্টাব্দে একজন রোমান নাগরিক উল্লেখ করেছেন যে, বেঙ্গলা নগর (বাংলাবাজারের প্রাচীন নাম হিসেবে ধরে নেওয়া যায়) বিশ্বের অন্যতম উৎকৃষ্ট সিল্ক ও সুতা উৎপাদন করত।
ব্রিটিশ শাসনামলে বাংলাবাজারের আশেপাশে ইংরেজ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের বসতি গড়ে উঠে। এ সময় এখানে টাকা-পয়সা ভাঙ্গানোর ব্যবসা শুরু হয় এবং এলাকাটি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। বাংলাবাজারের মধ্য দিয়ে যাওয়া প্রধান রাস্তাটি 'বাংলাবাজার সড়ক' নামে পরিচিত। এর একটি অংশ ১৯৩৬ সালে 'পি. কে. সড়ক' নামকরণ করা হয়, যা পরে 'সুভাষ বোস সড়ক' নামে পরিচিত হয়।
আজকের বাংলাবাজার ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ একটি এলাকা। এখানে নানা ধরনের জিনিসপত্র বিক্রি হয়। তবে, বাংলাবাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় হলো এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম বইয়ের বাজার। ১২০০ থেকে ১৩০০ টিরও বেশি বইয়ের দোকান এবং দেশের অনেক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের অফিস এই এলাকায় অবস্থিত। বাংলাদেশের বই প্রকাশনা, বিক্রয় এবং বিতরণের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বাংলাবাজারের অবদান অপরিসীম।