২০০৫ সালের ১৩ই নভেম্বর বিহারের জেহানাবাদ জেলে ঘটে যাওয়া বন্দী পলায়নের ঘটনা ভারতের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক ঘটনা হিসেবে স্মরণীয়। এই ঘটনায় ৩৮৯ জন বন্দি, যাদের মধ্যে অনেক মাওবাদী বিদ্রোহীও ছিলেন, পালিয়ে যান। জেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম ঢিলেঢালাপনার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়।
জেলটি ছিল ঔপনিবেশিক আমলের একটি জীর্ণশীর্ণ ভবন, যেখানে ৮০০ বন্দিকে আটকে রাখা হতো, যার ধারণক্ষমতা ছিল মাত্র ২৩০ জন। এই অতিরিক্ত জনসংখ্যা এবং নিরাপত্তার অভাবের সুযোগে মাওবাদীরা পালানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।
বিদ্রোহী নেতা অজয় কানু, যিনি নিজেও একজন বন্দি ছিলেন, এই পলায়নের মাস্টারমাইন্ড বলে মনে করা হয়। তিনি জেলের ভিতরে তার সহযোগীদের সাথে ফোন ও মেসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন। পুলিশের পোশাক পরে মাওবাদীরা জেলে ঢুকে, গুলিবর্ষণ করে, এবং প্রধান ফটক খুলে দিয়ে বন্দিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে।
এই ঘটনায় অন্তত দুজন নিহত হন এবং পুলিশের অস্ত্র লুট হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক প্রতিবেদনে এই ঘটনার উল্লেখ রয়েছে।
অজয় কানু পরে গ্রেফতার হলেও, তিনি জেল ভাঙ্গার ঘটনায় তার ভূমিকা অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, মাওবাদীরা তাদের মুক্ত করেছে। তবে এই দাবি নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে। এই ঘটনা বিহারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং মাওবাদী বিদ্রোহের ভয়াবহতাকে স্পষ্ট করে তুলে ধরেছে।