ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ

আপডেট: ২ জানুয়ারী ২০২৫, ৪:১১ এএম

ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষ (Palestinian National Authority, PNA), সংক্ষেপে পিএ (PA) নামে পরিচিত, হল একটি আংশিক স্বশাসিত প্রশাসনিক সংস্থা যার পশ্চিম তীরের উপর আংশিক বেসামরিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। ১৯৯৩-৯৫ সালের অসলো চুক্তির ফলে এই সংস্থাটি গঠিত হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নামেও পরিচিত। ২০০৬ সালের ফিলিস্তিনি নির্বাচনের পূর্বে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণও পিএ-এর হাতে ছিল, কিন্তু পরবর্তী ফাতাহ-হামাস দ্বন্দ্বে তারা গাজা হারিয়ে ফেলে।

পিএ গাজা ভূখণ্ড দাবি করে, যদিও হামাস বর্তমানে সেখানে কার্যত নিয়ন্ত্রণ করে। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে পিএ সরকারি নথিতে "ফিলিস্তিন রাষ্ট্র" নাম ব্যবহার করে, তবে জাতিসংঘ ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থাকে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯৪ সালের গাজা-জেরিকো চুক্তি অনুসারে ফিলিস্তিন মুক্তিসংস্থা ও ইসরাইল সরকারের মধ্যে পিএ গঠিত হয়; এটিকে পাঁচ বছরের একটি অন্তর্বর্তী সংস্থা হিসেবে পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

অসলো চুক্তি অনুসারে, ফিলিস্তিনি শহুরে এলাকা (এরিয়া এ) নিরাপত্তা ও বেসামরিক উভয় দিক থেকে পিএ-এর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণে থাকে। গ্রামীণ এলাকা (এরিয়া বি) শুধুমাত্র বেসামরিক নিয়ন্ত্রণে থাকে, আর এরিয়া সি (ইসরাইলি বসতি, জর্ডান উপত্যকা, বাইপাস রাস্তা) ইসরাইলি নিয়ন্ত্রণে থাকে। পূর্ব জেরুজালেম এই চুক্তির বাইরে ছিল। আলোচনার মাধ্যমে পিএ আরও কিছু এলাকার সামান্য নিয়ন্ত্রণ পেয়েছিল, কিন্তু দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল। ২০০৫ সালে ইসরাইল গাজা থেকে বসতি প্রত্যাহার করে, যার ফলে পিএ-এর নিয়ন্ত্রণ সমগ্র গাজায় প্রসারিত হয়, তবে ইসরাইল ক্রসিং পয়েন্ট, আকাশসীমা ও উপকূলীয় জল নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে।

২০০৬ সালের নির্বাচনে হামাসের জয়ের পর ইসমাইল হানিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করা হয় এবং একটি জাতীয় ঐক্য সরকার গঠিত হয়, কিন্তু হামাস-ফাতাহ দ্বন্দ্বের ফলে এটি কার্যত বিলুপ্ত হয়, বিশেষ করে গাজায়। ২০০৭ সালের জুনে গাজা হামাসের হাতে চলে যাওয়ার পর, পিএ চেয়ারম্যান মাহমুদ আব্বাস ঐক্য সরকারকে বরখাস্ত করে এবং দুটি পৃথক প্রশাসন তৈরি হয়: পশ্চিম তীরে ফাতাহ-নেতৃত্বাধীন পিএ এবং গাজায় হামাস সরকার।

পিএ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। ২০০৬ সালের হামাসের বিজয়ের পরে সহায়তা স্থগিত হয়, কিন্তু পরে পশ্চিম তীরে মাহমুদ আব্বাসের অফিসে সরাসরি সাহায্য পাঠানো হয়। ২০০৯ সালে মাহমুদ আব্বাসের রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ১৩৮টি দেশের কাছে স্বীকৃত। ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে অ-সদস্য পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। পিএ-এর কর্তৃত্ববাদী শাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সমালোচিত হয়।

মূল তথ্যাবলী:

  • ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষ (PNA) হল পশ্চিম তীরের উপর আংশিক স্বশাসিত প্রশাসন।
  • অসলো চুক্তি (১৯৯৩-৯৫) এর ফলে পিএ গঠিত হয়।
  • পূর্বে গাজার নিয়ন্ত্রণও পিএ-এর হাতে ছিল, বর্তমানে হামাস নিয়ন্ত্রণ করে।
  • পিএ "ফিলিস্তিন রাষ্ট্র" নাম ব্যবহার করে, জাতিসংঘ ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থাকে স্বীকৃতি দেয়।
  • পিএ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়েছে।
  • পিএ কর্তৃত্ববাদী শাসন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সমালোচিত।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ

০১ জানুয়ারি, ২০২৫

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ আলজাজিরার কার্যক্রম স্থগিত করেছে।

জানুয়ারি ২, ২০২৫

এই সংগঠন আল জাজিরার বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক প্রতিবেদন প্রচারের অভিযোগ এনেছে।

ট্যাগ: