ফায়ারফাইটার: বাংলাদেশের অগ্নিপরিষেবা ও বেসামরিক প্রতিরক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ
বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর দেশের জরুরি সেবা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই অধিদপ্তরের অন্তর্গত ফায়ারফাইটাররা প্রতিদিন অগ্নিকাণ্ড, দুর্যোগ, এবং বিভিন্ন জরুরি পরিস্থিতিতে জনগণের সেবায় নিয়োজিত। তাদের কাজ শুধুমাত্র আগুন নির্বাপণ নয়, উদ্ধার কাজ, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা, এবং দেশী-বিদেশী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা প্রদানও অন্তর্ভুক্ত।
- *ফায়ারফাইটারদের দায়িত্ব ও কাজ:**
- **অগ্নি নির্বাপণ:** বিভিন্ন ধরণের অগ্নিকাণ্ডে প্রাথমিক সাড়া প্রদান এবং আগুন নিয়ন্ত্রণ করা।
- **উদ্ধার কাজ:** অগ্নিকাণ্ডের সময় আটকে পড়া লোকজন, পশুপাখি, এবং অন্যান্য জীবজন্তুকে উদ্ধার করা।
- **প্রাথমিক চিকিৎসা:** আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা এবং হাসপাতালে প্রেরণ।
- **নিরাপত্তা প্রদান:** গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, অনুষ্ঠান, এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অগ্নি নিরাপত্তা প্রদান।
- **প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা:** জলোচ্ছ্বাস, ঝড়, বন্যা, ভূমিকম্প ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে উদ্ধার এবং সহায়তা প্রদান।
- **সচেতনতা বৃদ্ধি:** জনগণের মাঝে অগ্নি নিরাপত্তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি।
- *শারীরিক ও মানসিক যোগ্যতা:**
ফায়ারফাইটার হওয়ার জন্য উচ্চ শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা প্রয়োজন। শক্তি, সহনশীলতা, এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অপরিহার্য। চাপের মুখে স্থির থাকা এবং দলগতভাবে কাজ করার ক্ষমতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে অগ্নি নির্বাপণের কৌশল, উদ্ধার কাজ, এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করতে হয়।
- *শিক্ষাগত যোগ্যতা:**
ফায়ার সার্ভিসে ফায়ারফাইটার হিসেবে নিয়োগের জন্য কমপক্ষে মাধ্যমিক পাস এবং শারীরিক যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। তবে, অভিজ্ঞ ফায়ারফাইটারদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতায় শিথিলতা দেওয়া হয়।
- *বেতন ও সুযোগ-সুবিধা:**
ফায়ারফাইটারদের বেতন স্কেল সরকার নির্ধারিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। এছাড়াও, সরকারি চাকরির অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা, যেমন চিকিৎসা সুবিধা, ছুটি, এবং ভবিষ্যৎ কল্যাণ তহবিলের সুবিধা ও প্রযোজ্য।
- *বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ইতিহাস:**
১৯৩৯-৪০ সালে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮১ সালের ৯ এপ্রিল তৎকালীন ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর একীভূত হয়ে বর্তমান অধিদপ্তরের আকার গ্রহণ করে।
- *উল্লেখ্য:** ফায়ারম্যান পদের নাম বর্তমানে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে ফায়ারফাইটার নামকরণ করা হয়েছে।