পাকুন্দিয়া: কিশোরগঞ্জের একটি ঐতিহাসিক উপজেলা ও পৌরসভা
বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত পাকুন্দিয়া দুটি ভিন্ন প্রশাসনিক ইউনিটকে নির্দেশ করে: একটি উপজেলা এবং একটি পৌরসভা। উভয়ই ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ এবং জেলার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পাকুন্দিয়া উপজেলা:
১৮০.৫২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ২,৩৭,২১৮। ১৯২২ সালে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ১৯৮৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর উপজেলায় রুপান্তরিত হয়। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী, বানার, নরসুন্দা, এবং মঙ্গলাহাট নদী এ উপজেলার প্রধান নদ-নদী। এছাড়াও পদ্মকুড়ি বিল, ভরাবিল, কাহেতেরদিয়া বিল, চৈত্যকবালী বিল, বড় নালা বিল, বেজুরনালা বিল, নাওথাঘ্যা বিল ও দিঘা বিল উল্লেখযোগ্য জলাশয়।
উত্তরে হোসেনপুর ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা, দক্ষিণে কাপাসিয়া ও মনোহরদী উপজেলা, পূর্বে কটিয়াদি উপজেলা, এবং পশ্চিমে গফরগাঁও উপজেলা দ্বারা পাকুন্দিয়া উপজেলা ঘেরা। কিশোরগঞ্জ শহর থেকে এর দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার।
অর্থনীতি:
পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। ধান, ভুট্টা, গম, আলু, এবং বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি এখানকার প্রধান কৃষি ফসল। মঙ্গলবাড়িয়ার লিচু এর জন্য এটি বিশেষভাবে পরিচিত। এছাড়াও, মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে। চিনিকল, ময়দাকল, এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র কলকারখানাও এখানে অবস্থিত।
শিক্ষা:
উপজেলায় বেশ কয়েকটি স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসা রয়েছে। পাকুন্দিয়া সরকারি কলেজ, পাকুন্দিয়া আদর্শ মহিলা কলেজ উল্লেখযোগ্য।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
এগারসিন্দুর দুর্গ, সাদী মসজিদ, শাহ মাহমুদের মসজিদ, সালংকা জামে মসজিদ, এবং অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা পাকুন্দিয়ার ঐতিহাসিক গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এখানে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল।
পাকুন্দিয়া পৌরসভা:
২০০৭ সালের ৩০ মার্চ প্রতিষ্ঠিত এই পৌরসভার আয়তন ১৩.৩৩ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ২৮,৭৭৩। পাকুন্দিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন থেকে এটি গঠিত হয়েছে।
উভয় পাকুন্দিয়া উপজেলা ও পৌরসভা কিশোরগঞ্জ জেলার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আশা করি ভবিষ্যতে আরও বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে।