তাইওয়ানে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আগ্রহের জন্ম দিয়েছে। চীন-তাইওয়ান সম্পর্কের জটিলতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার কারণে এই নির্বাচনের ফলাফল অঞ্চলের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নির্বাচনের প্রেক্ষাপট:
তাইওয়ান, চীনের স্বায়ত্তশাসিত একটি দ্বীপ, যাকে চীন নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করে। এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে তাইওয়ান নিজেকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেখে। যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের প্রতিরক্ষার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে, যা চীনের কাছে অসন্তোষের কারণ। এই জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ তে প্রেসিডেন্ট ও আইনসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান প্রার্থীরা:
- উইলিয়াম লাই (লাই চিং-তে): ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি (ডিপিপি)র প্রার্থী, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে অনড়।
- হাও ইউ-ই: প্রধান বিরোধী দল কুওমিনতাং (কেএমটি)-এর প্রার্থী, নিউ তাইপে সিটির সাবেক মেয়র। চীনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পক্ষে।
- কো ওয়েন-জে: তাইওয়ান পিপলস পার্টি (টিপিপি)-এর প্রার্থী, তাইপের সাবেক মেয়র। তাইওয়ান ও চীনের সম্পর্কে তাঁর অবস্থান কিছুটা ধূসর।
নির্বাচনের ফলাফল:
ডিপিপির প্রার্থী উইলিয়াম লাই চিং-তে জয়ী হয়েছেন। তিনি তাইওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
চীনের প্রতিক্রিয়া:
চীন এই নির্বাচনকে তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে বলে মনে করে এবং লাই চিং-তে'র জয়কে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জয় হিসেবে দেখে। তাইওয়ান প্রণালীতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা:
যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের স্বায়ত্তশাসনের সমর্থক এবং তাদের প্রতিরক্ষার জন্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে আসছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সাথে তাদের সম্পর্ক ও নজরদারীতে রাখে।
অর্থনৈতিক দিক:
তাইওয়ান বিশ্বের অর্ধেকের বেশি সেমিকন্ডাক্টর চিপ উৎপাদন করে। এই অর্থনৈতিক গুরুত্বের কারণে এই নির্বাচনের ফলাফল বিশ্ব অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলবে।
গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু:
তাইওয়ানের ভোটারদের কাছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জীবনমানের উন্নয়ন এবং চীনের সাথে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ ছিল প্রধান নির্বাচনী ইস্যু।