জয়া বচ্চন: এক অভিনেত্রীর অসাধারণ জীবনযাত্রা
জয়া বচ্চন, বিবাহপূর্ব নামে জয়া ভাদুড়ী, একজন বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ। ৯ই এপ্রিল ১৯৪৮ সালে মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে জন্মগ্রহণকারী জয়া, বর্তমানে সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য। ২০০৪ সাল থেকে তিনি চার মেয়াদে এই পদে অধিষ্ঠিত আছেন। তিনি মূলধারার এবং 'মধ্যবর্তী' চলচ্চিত্রে তার স্বাভাবিক অভিনয়ের জন্য পরিচিত।
জয়ার চলচ্চিত্র জীবনের সূচনা হয় কিশোর বয়সে সত্যজিৎ রায়ের 'মহানগর' (১৯৬৩) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। প্রাপ্তবয়স্ক চরিত্রে তার প্রথম চলচ্চিত্র ছিল হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের 'গুড্ডি' (১৯৭১)। 'উপহার' (১৯৭১), 'কোশিশ' (১৯৭২), ও 'কোরা কাগজ' (১৯৭৪) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি প্রশংসিত হন। অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে 'জঞ্জির' (১৯৭৩), 'অভিমান' (১৯৭৩), 'চুপকে চুপকে' (১৯৭৫), 'মিলি' (১৯৭৫), ও 'শোলে' (১৯৭৫) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
বিবাহের পর তিনি চলচ্চিত্রে কম কাজ করেন। ১৯৮১ সালে 'সিলসিলা' চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পর দীর্ঘ বিরতি নিয়ে ১৯৯৮ সালে 'হাজার চৌরাশি কী মা' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয়ে ফিরে আসেন। 'ফিজা' (২০০০), 'কভি খুশি কভি গম...' (২০০১), ও 'কাল হো না হো' (২০০৩) চলচ্চিত্রে তার অভিনয় ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে। তিনি নয়টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন, এর মধ্যে তিনটি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী এবং তিনটি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে। ২০০৭ সালে তিনি ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন এবং ১৯৯২ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে।
জয়া বচ্চন অমিতাভ বচ্চনের স্ত্রী এবং অভিষেক বচ্চন ও শ্বেতা বচ্চন নন্দার মা। তিনি বাংলাদেশের নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার বাঘবেড় গ্রামে পৈতৃক আদি নিবাস রয়েছে। জয়ার পিতা তরুণ কুমার ভাদুড়ী ছিলেন একজন খ্যাতনামা সাংবাদিক। তিনি ভোপালের সেন্ট জোসেফ কনভেন্ট স্কুলে পড়াশোনা করেছেন এবং পুনের ভারতীয় চলচ্চিত্র ও দূরদর্শন সংস্থান থেকে স্বর্ণপদক নিয়ে স্নাতক হন।
২০১১ সালে তিনি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র 'মেহেরজান' এ অভিনয় করেন। সম্প্রতি তিনি 'রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি' ছবিতে অভিনয় করেছেন। তিনি রাজনীতিতেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।