জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি: গুচ্ছ পদ্ধতির বিরোধিতা ও স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে অবস্থান
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতি দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছভুক্তির বিরোধিতা করে আসছে এবং নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। রবিবার (২২ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দীন এ বিষয়ে স্পষ্ট করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, গুচ্ছ পদ্ধতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বকীয়তাকে ক্ষুণ্ণ করে এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান করার পাঁয়তারা। তিনি আরও যোগ করেন যে, গুচ্ছের ফলে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন ফাঁকা থাকার প্রবণতা বেড়েছে এবং এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের অংশ।
শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১৮-১৯ সেশনে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় একজন শিক্ষক ইনভিজিলেটর হিসেবে যে পরিমাণ পারিশ্রমিক পেতেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ২০২০-২১ সালে তা ৭৫% বেড়েছে এবং ২০২২-২৩ সালে প্রায় ২৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অর্থ হলো, গুচ্ছ পদ্ধতি শিক্ষকদের আর্থিকভাবে লাভবান করেছে। তবে, তারা গুচ্ছ পদ্ধতির অসুবিধাগুলির প্রতিও ধ্যান আকর্ষণ করেন। তারা উল্লেখ করে যে, গুচ্ছ ভর্তিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬০টি আসন ফাঁকা ছিল, যেখানে নিজস্ব পদ্ধতিতে কখনোই এমন হয়নি।
শিক্ষক সমিতি ২০২১ সাল থেকে গুচ্ছভুক্তির বিরোধী আন্দোলন করে আসছে এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে, কিছু স্বার্থান্বেষী চক্রের কারণে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হয়নি বলেও অভিযোগ করেছে তারা। তারা জানিয়েছে, ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি একটি সুন্দর ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করলে এবং দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের একই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা হলে তারা সম্মতি দেবে; অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমান ভর্তি পরীক্ষার প্রক্রিয়া চালু থাকবে।