গুমের স্থান

আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮:৫৫ এএম

বাংলাদেশে গুমের স্থান: একটি বিতর্কিত ইতিহাস

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ‘গুম’ একটি অত্যন্ত বিতর্কিত ও আলোচিত বিষয়। অনেকের ধারণা, এই গুমের ঘটনাগুলো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এবং পরিকল্পিতভাবে ঘটেছে। গুমের শিকারদের অনেকের ই আর কখনও সন্ধান মেলেনি। এই লেখায় আমরা বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় জড়িত বিভিন্ন স্থান, সংগঠন, এবং ব্যক্তিদের উপর একটি দৃষ্টিপাত করবো।

গুমের ঘটনার সময়কাল ও সংখ্যা:

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ শাসনামলে হাজার হাজার মানুষ গুম হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন এখনও পর্যন্ত ১৬০০ এর ও বেশি রিপোর্ট পেয়েছে এবং ধারণা করছে এর চেয়েও দুই বা তিনগুণ বেশি ঘটনা ঘটেছে।

গুমের স্থান:

গুমের ঘটনায় জড়িত স্থানগুলো প্রধানত গোপনীয় এবং সরকারি সংস্থার অধীনে থাকে। তবে অনেকেই বিভিন্ন সরকারী ভবন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্যাম্প, এবং গোপন বন্দিশালা হিসেবে চিহ্নিত স্থানগুলোকে গুমের স্থান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গুম কমিশন কমপক্ষে আটটি গোপন স্থাপনা চিহ্নিত করেছে। এই স্থানগুলোর ঠিকানা সাধারণত গোপন রাখা হয় জনসাধারণের নিকট। সুখরঞ্জন বালির অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চত্বর থেকে তুলে নেওয়া হয়। তাকে পরে একটি খালি কক্ষে আটকে রাখা হয় যার কোনো জানালা বা ফাঁকা স্থান ছিল না।

গুমের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা:

গুমের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে সাধারণত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা থাকেন। তবে অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা ও এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। সুখরঞ্জন বালির অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, তাকে সাদাপোশাকধারী লোকেরা তুলে নেয়। গুম কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মীরা এই গুমের ঘটনার সাথে জড়িত।

গুমের ঘটনায় জড়িত সংগঠন:

এই গুমের ঘটনায় বিভিন্ন সরকারি সংস্থা জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। গুম কমিশন ডিজিএফআই, র‍্যাব, এবং সিটিটিসি'র ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছে।

গুমের ঘটনার পরিণতি:

গুমের শিকার অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। অনেকের লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে ও জানা গেছে। এই ঘটনাগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।

কমিশনের তদন্ত ও প্রতিবেদন:

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারী থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনা তদন্ত করতে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গঠিত হয়। কমিশনের প্রতিবেদনে গুমের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিদের উপর তীব্র অভিযোগ আনা হয়।

উপসংহার:

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার সমস্যা। এই ঘটনাগুলো তদন্ত করে দোষীদের বিচার করা অত্যন্ত জরুরি। এই ঘটনা গুলো বাংলাদেশের জনগণের বিশ্বাস ক্ষুণ্ণ করেছে এবং দেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি ও নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।

গুমের ঘটনা তদন্ত কমিশন

[

২০০৯-২০২৪ সালের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ গুম হয়েছেন।

গুমের ঘটনায় সরকারি সংস্থার জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।

গুমের শিকার অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

গুম কমিশন কমপক্ষে আটটি গোপন বন্দিশালা চিহ্নিত করেছে।

প্রতিবেদনে গুমের ঘটনার সঙ্গে শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সম্পৃক্ততার দাবি করা হয়েছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ২০০৯-২০২৪ সালের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ গুম হয়েছেন।
  • গুমের ঘটনায় সরকারি সংস্থার জড়িত থাকার অভিযোগ আছে।
  • গুমের শিকার অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
  • গুম কমিশন কমপক্ষে আটটি গোপন বন্দিশালা চিহ্নিত করেছে।
  • প্রতিবেদনে গুমের ঘটনার সঙ্গে শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সম্পৃক্ততার দাবি করা হয়েছে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - গুমের স্থান