কেয়া আক্তার সাথীর মানবপাচারের শিকার হওয়ার ঘটনা এবং বাংলাদেশের মানবপাচারের বাস্তবতা
কেয়া আক্তার সাথী মানবপাচারের এক ভয়াবহ শিকার। ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সানভির ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস নামক সংস্থা তাকে বিনা খরচে বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভন দেখিয়ে দুবাই পাঠায় এবং চার লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়। ভুক্তভোগী পরিবার রামপুরা থানায় মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত করে চারজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ঢাকার মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে কেয়া আক্তার সাথী একমাত্র সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য প্রদান করেন। পরবর্তীতে তিনি আসামিদের সাথে আপস করে এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পান এবং আসামিদের খালাসের বিষয়ে কোন আপত্তি জানাননি।
এই ঘটনাটি বাংলাদেশের মানবপাচারের বাস্তবতা তুলে ধরে। কেয়া আক্তার সাথীর মতো অনেক মানুষ প্রতারণার শিকার হয়ে বিদেশে পাচার হচ্ছে। ঢাকার মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে গঠনের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত এক হাজার ৪৫০টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে, যার মধ্যে ৯৬% মামলার আসামি খালাস পেয়েছেন। এই উচ্চ হারের খালাসের পিছনে সাক্ষীর অভাব, সাক্ষীদের সুরক্ষা ব্যবস্থার অভাব, দীর্ঘসূত্রতা এবং পাচারকারীদের প্রভাব বিস্তারের মতো বিভিন্ন কারণ রয়েছে বলে আইনজীবী ও পাবলিক প্রসিকিউটরদের মন্তব্যে উঠে এসেছে। মানবপাচারের মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকার অভিযোগও রয়েছে।
কেয়া আক্তার সাথীর ঘটনাটি বাংলাদেশে মানবপাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জগুলোকে তুলে ধরে এবং মানবপাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।