ওবায়দুল্লাহ তারেক

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

ওবায়দুল্লাহ তারেক নয়, তারেক মাসুদ (১৯৫৬-২০১১) ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি ১৯৫৬ সালের ৬ই ডিসেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাদ্রাসা থেকে শিক্ষাজীবন শুরু করে পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তারেক মাসুদ ছিলেন চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের একজন সক্রিয় সদস্য এবং স্বাধীনধারার চলচ্চিত্র আন্দোলনের অগ্রগণ্য ব্যক্তিত্ব। শিল্পী এস.এম. সুলতানের জীবনীভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ‘আদম সুরত’ (১৯৮৯) নির্মাণের সময় প্রায় সাত বছর তিনি শিল্পীর সাথে কাটিয়ে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দর্শন গঠন করেন।

তারেক মাসুদের চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ (১৯৯৫) দিয়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীন তিনি লিয়ার লেভিনের ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ফুটেজ আবিষ্কার করেন, যা এই চলচ্চিত্র নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ‘মুক্তির গান’ ‘ফিল্ম সাউথ এশিয়া’ থেকে বিশেষ সম্মাননা লাভ করে। এই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তার ফলে তিনি ‘মুক্তির কথা’ (১৯৯৯) নির্মাণ করেন।

তারেক মাসুদের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র ‘মাটির ময়না’ (২০০২) কান চলচ্চিত্র উৎসবে ফিপ্রেস্কি আন্তর্জাতিক সমালোচক পুরস্কার অর্জন করে এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করে। এই চলচ্চিত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এবং এক মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলের দৃষ্টিতে মুক্তিযুদ্ধের চিত্রায়ন করে। তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘অন্তর্যাত্রা’ (২০০৬), ‘নরসুন্দর’ (২০০৯) এবং ‘রানওয়ে’ (২০১০)। তিনি বাংলাদেশের প্রথম ভিডিও চলচ্চিত্র ‘সোনার বেড়ি’ (১৯৮৫), প্রথম অ্যানিমেশন ‘ইউনিসন’ (১৯৯৪) এবং প্রথম ডিজিটাল চলচ্চিত্র ‘অন্তর্যাত্রা’ নির্মাণ করেছেন। তার স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ তার বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে সহ-পরিচালনা ও সম্পাদনার কাজে জড়িত ছিলেন।

২০১১ সালের ১৩ই আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওরে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। তিনি মোট ১৬টি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। জাতীয় পরিচয়, লোকসংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধ তার চলচ্চিত্রের প্রধান বিষয়বস্তু ছিল।

মূল তথ্যাবলী:

  • তারেক মাসুদ ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা
  • তিনি ‘মুক্তির গান’ এবং ‘মাটির ময়না’সহ বহু স্মরণীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন
  • ‘মাটির ময়না’ কান চলচ্চিত্র উৎসবে পুরষ্কার অর্জন করে
  • তিনি বাংলাদেশের প্রথম ভিডিও, অ্যানিমেশন ও ডিজিটাল চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন
  • ২০১১ সালে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।