বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (এফডিসি) বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের হৃৎপিণ্ড। ঢাকার তেজগাঁওয়ে অবস্থিত এই আধা-স্বায়ত্তশাসিত সরকারি সংস্থাটি তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করে। ১৯৫৭ সালের ২৭শে মার্চ পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বিল, ১৯৫৭’ পেশ করেন এবং ৩রা এপ্রিল এটি পাস হয়। ১৯ জুন, ১৯৫৭ থেকে আইনটি কার্যকর হয়।
এফডিসি'র প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়ন। এফডিসি এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মুক্তিতে সহায়তা করেছে। ১৯৫৯ সাল থেকে এফডিসি থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু হয়। প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন আবুল খায়ের এবং নির্বাহী পরিচালক ছিলেন নাজির আহমেদ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সংস্থার নাম পরিবর্তন করে “বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন” রাখা হয়।
এফডিসির কার্যক্রম পরিচালনা করে একটি আট সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ, যেখানে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব পদাধিকারবলে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এফডিসিতে প্রায় ৪৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে।
এফডিসিতে ৯টি শুটিংয়ের তলা (বর্তমানে ৭টি ব্যবহৃত), ১৪টি রূপসজ্জার কক্ষ, ১২টি শুটিং ইউনিট, ৩টি সাউন্ড থিয়েটার, রঙিন ও সাদাকালো চলচ্চিত্রের জন্য গবেষণাগার, ১৫টি সম্পাদনা যন্ত্র, অপটিক্যাল মেশিন, চলচ্চিত্র ক্যামেরা, বিভিন্ন ধরনের আলোকবাতি, ব্যাক প্রজেকশন যন্ত্র, পুকুর, কৃত্রিম হ্রদ, বাগান ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এছাড়াও এফডিসি চলচ্চিত্র নির্মাণ, প্রযোজনা ও পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করে, প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করে, নতুন শিল্পীদের খোঁজে, চলচ্চিত্র উৎসব ও সেমিনারের আয়োজন করে, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার কমিটি, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড, চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি এবং চলচ্চিত্র নীতিমালা প্রণয়ন কমিটিতে অংশগ্রহণ করে এবং প্রকাশনা করে। এফডিসির বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার জন্য এফডিসির ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক উৎসের সাহায্য নেওয়া যায়।