ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বাংলাদেশের গ্রামীণ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ ১৩ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়: ৯ জন সাধারণ সদস্য (প্রতি ওয়ার্ড থেকে একজন), ৩ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য এবং একজন চেয়ারম্যান। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা তাদের নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে জনগণের সেবা প্রদান, উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ, এবং স্থানীয় সমস্যা সমাধান।
ইউনিয়ন পরিষদের ইতিহাস: ইউনিয়ন পরিষদের মূল ভিত্তি গ্রাম চৌকিদারি আইন, ১৮৭০ সাল থেকে। পরবর্তীতে ১৮৮৫ সালে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন আইনের মাধ্যমে ইউনিয়ন কমিটি গঠিত হয়। স্বাধীনতার পর, ১৯৭২ সালে ইউনিয়ন কাউন্সিলের নাম পরিবর্তন করে ইউনিয়ন পঞ্চায়েত করা হয় এবং পরে ১৯৭৩ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নামকরণ করা হয়।
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের যোগ্যতা: ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হতে হলে বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে, কমপক্ষে ১৮ বছর বয়সী হতে হবে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার তালিকাভুক্ত হতে হবে এবং সরকারি কর্মচারী হতে পারবে না।
ইউনিয়ন পরিষদের আয়ের উৎস: ইউনিয়ন পরিষদের আয়ের উৎসগুলি হল- বাড়ি, দালান-কোঠার উপর কর, জন্ম, বিবাহ ও মৃত্যুর উপর ফি, সিনেমা, থিয়েটার, মেলা ইত্যাদির উপর কর, যানবাহনের উপর কর, লাইসেন্স ও পারমিট ফি, হাট-বাজার, জলমহাল ও ফেরিঘাট ইজারা, টোল সংগ্রহ, সরকারি অনুদান ইত্যাদি।
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের দায়িত্ব: ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের দায়িত্বের বিস্তারিত ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৩ ধারায় উল্লেখিত হয়েছে। এই দায়িত্বগুলি বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিভক্ত হয়েছে যেমনঃ পৌর কার্যাবলী, পুলিশ ও নিরাপত্তা, রাজস্ব ও প্রশাসন, উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণ, এবং বিচার। সাধারণ সদস্য এবং সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের আলাদা আলাদা দায়িত্ব থাকলেও, কিছু দায়িত্ব যৌথভাবে পালন করতে হয়। সংরক্ষিত মহিলা সদস্যগণ বিভিন্ন স্থায়ী কমিটিতে অংশগ্রহণ করেন এবং প্রকল্প কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমানে ৪৫৫৪টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে এবং ইউনিয়ন পরিষদের কার্যকাল ৫ বছর। ইউনিয়ন পরিষদ গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।