ইউক্রেন: পূর্ব ইউরোপের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র
ইউক্রেন (ইউক্রেনীয়: Україна, প্রতিবর্ণীকৃত: Ukraïna), পূর্ব ইউরোপের একটি প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ দেশ। আয়তনের দিক থেকে রাশিয়ার পরে ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হিসেবে পরিচিত। ৬,০৩,৬২৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দেশে প্রায় ৪ কোটি ৩৬ লক্ষ মানুষ বসবাস করে। ইউক্রেনের উত্তরে বেলারুশ, পশ্চিমে পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি, দক্ষিণ-পশ্চিমে রোমানিয়া ও মলদোভা, দক্ষিণে কৃষ্ণ সাগর ও আজভ সাগর এবং পূর্বে ও উত্তর-পূর্বে রাশিয়া অবস্থিত। কিয়েভ হলো ইউক্রেনের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর।
ঐতিহাসিক ইউক্রেন:
খ্রিস্টপূর্ব ৩২০০ শতক থেকেই ইউক্রেন অঞ্চলে মানুষের বসতির প্রমাণ পাওয়া যায়। মধ্যযুগে এটি পূর্ব স্লাভীয় সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র ছিল। ৯ম শতক থেকে কিয়েভান রুশ নামক একটি শক্তিশালী রাজ্যের অংশ ছিল ইউক্রেন। ১৩শ শতকে মঙ্গোল আক্রমণের পর ইউক্রেন বিভিন্ন বিদেশি শক্তির অধীনে থাকে, যেমন পোল্যান্ড-লিথুয়ানিয়া রাষ্ট্রজোট, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্য, উসমানীয় সাম্রাজ্য ও রুশ জার সাম্রাজ্য। ১৭ ও ১৮ শতকে কসাক রাজ্যের উত্থান ঘটলেও পরে তা রাশিয়া ও পোল্যান্ডের মধ্যে বিভক্ত হয়। রুশ বিপ্লবের পর ১৯১৮ সালে ইউক্রেন স্বাধীনতা ঘোষণা করে, কিন্তু পরে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হয়ে যায়। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইউক্রেন পুনরায় স্বাধীনতা লাভ করে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ:
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় এবং পূর্ব ইউক্রেনে রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা করে যুদ্ধ শুরু করে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া পূর্ণমাত্রায় ইউক্রেন আক্রমণ করে। এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাশিয়ার এই আগ্রাসনকে নিন্দা করেছে।
অর্থনীতি ও সংস্কৃতি:
ইউক্রেন কৃষিকাজের জন্য বিখ্যাত। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শস্য রপ্তানিকারক দেশ ইউক্রেন। তবে দারিদ্র্য ও দুর্নীতি একটি বড় সমস্যা। ইউক্রেনের সংস্কৃতি সমৃদ্ধ, যার সাহিত্য ও লোকসংস্কৃতিতে বহু প্রাচীন ঐতিহ্যের সন্ধান পাওয়া যায়।
বর্তমান অবস্থা:
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বর্তমানে চলমান রয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধ বন্ধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ এবং এ যুদ্ধের প্রভাব বিশ্বের উপর গভীরভাবে অনুভূত হবে।