ইসলামের ইতিহাসে হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ) এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর চাচাতো ভাই, জামাতা এবং খুবই ঘনিষ্ঠ সাহাবি। আনুমানিক ৬০১ খ্রিস্টাব্দে মক্কার কাবা শরিফের অভ্যন্তরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শৈশবকাল থেকেই নবী করীম (সাঃ) তাঁর পালন-পোষণ এবং শিক্ষার দায়িত্ব নেন। মাত্র ৯-১১ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম কয়েকজনের একজন ছিলেন আলী (রাঃ)। ইসলামের প্রচারে ও রক্ষায় তিনি নবী করীম (সাঃ)-এর অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী ছিলেন। হিজরতের রাতে নবী (সাঃ) কে রক্ষা করার জন্য তাঁর বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা ইতিহাসে স্মরণীয়। তিনি বদর, উহুদ, খন্দক, খাইবারসহ নানা যুদ্ধে নবী করীম (সাঃ)-এর পাশে অসাধারণ সাহসিকতা ও বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন।
মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ইন্তেকালের পর খিলাফতের বিষয়টি নিয়ে শিয়া ও সুন্নি মতবাদে বিভাজন ঘটে। সুন্নিদের মতে আলী (রাঃ) চতুর্থ রাশিদুন খলিফা, কিন্তু শিয়া মুসলমানরা তাঁকে প্রথম ইমাম ও মুহাম্মদের ন্যায্য উত্তরাধিকারী হিসেবে মনে করেন। ৬৫৬ সালে হযরত আলী (রাঃ) খলিফা নির্বাচিত হন। তার খিলাফতকালে উটের যুদ্ধ, সিফফিনের যুদ্ধ ও খারিজীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধসহ নানা রাজনৈতিক ও সামরিক ঘটনা ঘটে। ৬৬১ খ্রিস্টাব্দে খারিজী আব্দুর রহমান ইবনে মুলজাম তাকে কুফার মসজিদে হত্যা করে। তার সমাধিস্থান নাজাফ, ইরাক।
আলী (রাঃ) ছিলেন একজন প্রখর বুদ্ধি, দানশীলতা ও সাহসের অধিকারী ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন সাহসী যোদ্ধা, বিচক্ষণ শাসক, প্রজ্ঞাবান নেতা ও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি। তার জীবন ও কর্মকান্ড ইসলামি ইতিহাসে আলোকিত দৃষ্টান্ত। ‘নাহজুল বলাগা’ তার বিখ্যাত রচনা। তিনি মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন এবং মদিনায় বসবাস করেন। হযরত ফাতিমা (রাঃ) তাঁর স্ত্রী ছিলেন এবং হযরত হাসান ও হুসাইন (রাঃ) তাঁর পুত্র।