আবু বকর আল-আমিন: ইসলামের প্রথম খলিফা
আবু বকর আল-আমিন (রাঃ) ইসলামের ইতিহাসে এক অমূল্য নাম। তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম খলিফা, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সবচেয়ে বিশিষ্ট সঙ্গী ও শ্বশুর। তার জন্ম ৫৭৩ সালে মক্কায় এবং মৃত্যু ৬৩৪ সালে মদিনায়। ৫৭৩ সালে মক্কার কুরাইশ বংশের বনু তাইম গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবু কুহাফা ও মাতার নাম সালমা বিনতে সাখার। তার পূর্ণ নাম আব্দুল্লাহ ইবনে উসমান ইবনে আমির ইবনে আমর ইবনে কাব ইবনে সাদ ইবনে তায়িম ইবনে মুররাহ ইবনে কাব ইবনে লুয়াই ইবনে গালিব ইবনে ফিহর আল কুরাইশি।
তিনি ছিলেন একজন ধনী ব্যবসায়ী এবং ক্রীতদাসদের মুক্ত করতেন। মুহাম্মদের ইসলামের আমন্ত্রণের পর তিনি প্রথম দিকের মুসলমানদের একজন হন এবং তার সম্পদ ইসলামের প্রচারে ব্যয় করেন। মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের সময় তিনি মুহাম্মদের সঙ্গী ছিলেন এবং সাওর পর্বতের গুহায় তাদের আশ্রয় নেওয়া ঐতিহাসিক ঘটনার অংশীদার ছিলেন।
৬৩২ সালে মুহাম্মদের মৃত্যুর পর সাকিফার বৈঠকে তিনি খলিফা হিসাবে নির্বাচিত হন। তার খিলাফতকালে তিনি রিদ্দা যুদ্ধে বিভিন্ন বিদ্রোহ দমন করেন এবং সমগ্র আরব উপদ্বীপে ইসলামের শাসন সুসংহত করেন। আবু বকরের খিলাফত মাত্র দুই বছর স্থায়ী হয়।
তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের মধ্যে কুরআন সংকলন উল্লেখযোগ্য। তার মৃত্যুর পর তার কন্যা আয়েশা (রাঃ) এবং উমর (রাঃ) কুরআন সংকলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি উসমান ইবনে আফফানের কাছে তার শেষ প্রমাণ নির্দেশ করেন, যেখানে উমর ইবনে আল-খাত্তাবকে তার উত্তরসূরি হিসেবে নিযুক্ত করেন। আবু বকরকে মুহাম্মাদের সাথে মদিনার আল-মসজিদ আন-নাবাউইতে সমাহিত করা হয়েছে।
আবু বকর আল-আমিনের খিলাফত সংক্ষিপ্ত হলেও ইতিহাসে তার গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি ইসলামের প্রসার ও স্থিতিশীলতার জন্য অতুলনীয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সম্মানিত।
আবু বকর আল-আমিন: ফুরফুরা দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা
আবু বকর আল-আমিন নামে আরও একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একজন বিখ্যাত পীর। তিনি ফুরফুরা দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা। তার জন্ম ১৮৪৫ সালে হুগলি জেলার ফুরফুরায়। তার পিতার নাম আব্দুল মুক্তাদির সিদ্দিকী এবং মাতার নাম মুহব্বতুন নেসা বেগম। ধর্মীয় অবদানের জন্য তাকে আমীরে শরিয়ত বলা হতো। তিনি বাংলা ও ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইসলামী শরীয়ত ও তরীকত প্রচারে, ওয়াজ-নসিহত, মসজিদ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা, পত্রপত্রিকা প্রকাশ ও শিক্ষা বিস্তারে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তার মাজার ফুরফুরায় অবস্থিত এবং দুই বাংলার মুসলমানদের কাছে ধর্মীয় তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত।