অনলাইন চাকরির প্রতারণা বর্তমানে বাংলাদেশে একটি ব্যাপক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। অনেক প্রতারক, ব্যক্তি, সংগঠন ও চক্র ভুয়া চাকরির প্রস্তাবের মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে অর্থ ও ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। এই প্রতারণাগুলোর পেছনে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হয়, যেমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইমেইল, ফোনকল এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। প্রতারকরা প্রলোভনমূলক বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে আকর্ষণ করে, কখনো কম সময়ে বেশি আয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়, অথবা দ্রুত চাকরি পাওয়ার কথা বলে। চাকরির আবেদনের জন্য অর্থ প্রসেসিং ফি, প্রশিক্ষণ ফি অথবা অন্যান্য নামে টাকা দাবি করে। অনেকেই ইমেইলের লিঙ্কে ক্লিক করে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে। অনেক সময় প্রতারকরা অবিশ্বাস্য পরিমান অর্থের প্রস্তাব দেয়। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান কম সময়ে বেশি আয়ের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করে, তবে তা ভালোভাবে যাচাই করা উচিত। প্রতারণামূলক চাকরির বিজ্ঞাপনে কাজের বিবরণ সাধারণত অস্পষ্ট ও অসম্পূর্ণ থাকে। প্রকৃত চাকরির বিজ্ঞাপনে কাজের দায়িত্ব, কর্তব্য ও চাকরিদাতার প্রত্যাশা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়।
এই প্রতারণা থেকে বাঁচার জন্য, চাকরির আবেদন করার আগে প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে ভালো করে খোঁজখবর নেওয়া উচিত। অজানা লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেকোনো অর্থ প্রদানের আগে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। প্রতিষ্ঠানের বৈধতা যাচাই করার জন্য অনলাইনে খোঁজ করা যেতে পারে এবং রিভিউ দেখা যেতে পারে। অবশেষে, যদি কেউ এ ধরনের প্রতারণার শিকার হন তাহলে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করা উচিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্প্রতি অনলাইন চাকরির প্রতারণায় জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এই ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে সচেতন থাকা প্রয়োজন। সম্প্রতি, ঢাকায় এক চীনা নাগরিকসহ তিনজনকে অনলাইন চাকরির প্রতারণায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমান অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে। অন্য একটি ঘটনায়, র্যাব একটি সংঘবদ্ধ চক্রকে গ্রেপ্তার করেছে যারা অনলাইনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালাতো এবং মুক্তিপণ দাবি করত। এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে অনলাইন চাকরির প্রতারণা একটি গুরুতর সমস্যা এবং সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি।