মোটোরোলা: একটি ইতিহাস
মোটোরোলা, নামটি শুনলেই অনেকের মনে ভেসে উঠবে মোবাইল ফোনের সোনালী অতীত। ১৯২৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই আমেরিকান প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোন, রেডিও, এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক্সের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত ছিল। তবে সময়ের সাথে সাথে মোটোরোলার যাত্রা বেশ কিছু উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে।
প্রাথমিক দিনগুলিতে মোটোরোলা রেডিও এবং টেলিভিশন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। তাদের উদ্ভাবনী কার্যকলাপ, যেমন পোর্টেবল রেডিও, মোটোরোলাকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি এনে দিয়েছিল। পরবর্তীতে, মোবাইল ফোন বিপ্লবেও মোটোরোলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তাদের RAZR ফোন বাজারে একটা বড় ধাক্কা হয়েছিল। এই ফোনের সুন্দর ডিজাইন এবং কমপ্যাক্ট আকারের কারণে বিশ্বব্যাপী কয়েক কোটি RAZR বিক্রি হয়েছিল।
তবে, বাজারের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থতার কারণে মোটোরোলার বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। উচ্চ-মানের টাচস্ক্রিন ফোনের প্রতিযোগিতায় তারা পিছিয়ে পড়ে। এর ফলে, ২০০০-এর দশকের শেষের দিকে মোটোরোলার অবস্থা অনেকটা খারাপ হয়ে যায়।
২০১১ সালে, মূল মোটোরোলা দুটি পৃথক প্রতিষ্ঠানে বিভক্ত হয়: মোটোরোলা সলিউশন এবং মোটোরোলা মোবিলিটি। মোটোরোলা মোবিলিটি মোবাইল ফোন ব্যবসা এবং গ্রাহক-উৎসাহিত পণ্যগুলো নিয়ে কাজ শুরু করে। ২০১২ সালে, গুগল ১২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে মোটোরোলা মোবিলিটি কিনে নেয়। গুগলের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মোটোরোলার পেটেন্ট পোর্টফোলিও অধিগ্রহণ করে অ্যান্ড্রয়েড ভিত্তিক ফোন নির্মাতাদের সুরক্ষা দেওয়া।
তবে, ২০০৪ সালে গুগল আবার মোটোরোলা মোবিলিটি চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান লেনোভোকে বিক্রি করে দেয়। লেনোভোর অধীনে, মোটোরোলা মোবাইল ফোন বাজারে তার অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করে। তারা বিভিন্ন সিরিজের ফোন বাজারে ছাড়ে, যেমন মোটো জি, মোটো ই, মোটো এক্স, এবং রাজার সিরিজের ফোল্ডেবল ফোন।
আজকের দিনে মোটোরোলা লেনোভোর অধীনে মোবাইল ফোন উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের নতুন প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী ডিজাইনের মাধ্যমে তারা বাজারে প্রতিযোগিতা করছে। তবে কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে মোটোরোলা এখনও তার অতীতের গৌরব ধরে রাখার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে।