হাইকোর্ট

বাংলাদেশের হাইকোর্ট: ইতিহাস ও বর্তমান

বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল হাইকোর্ট। এটি দেশের উচ্চ আদালত হিসেবে কার্যকরী, এবং এর ইতিহাস ব্রিটিশ ভারতের শাসনামলে ফিরে যায়। ১৮৬১ সালের হাইকোর্টস অ্যাক্টের মাধ্যমে ব্রিটিশ ভারতের প্রতিটি প্রেসিডেন্সিতে একটি করে হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করা হয়। কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হাইকোর্ট সমগ্র বাংলার জন্য কার্যকর ছিল। তৎকালীন সুপ্রিম কোর্ট এবং সদর আদালতের স্থলে এই হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পরেও কলকাতা হাইকোর্ট বাংলার জন্য কার্যকর ছিল। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনে প্রতিটি প্রদেশে একটি করে হাইকোর্ট এবং কেন্দ্রে একটি ফেডারেল কোর্ট প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা ছিল। ভারত বিভাগের পর ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান (প্রভিশনাল সংবিধান) আদেশের মাধ্যমে ঢাকায় একটি হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্ব বাংলার রাজধানী ঢাকায় এই হাইকোর্ট স্থাপনের ফলে পূর্ব বাংলার নাগরিকদের বিচারের সুযোগ সহজতর হয়।

১৯৫৪ সালে গণপরিষদ ১৯৩৫ সালের আইন সংশোধন করে হাইকোর্টের ক্ষমতা ও এখতিয়ার ব্যাপকভাবে বর্ধিত করে। ১৯৫৬ এবং ১৯৬২ সালের সংবিধানেও হাইকোর্টের কার্যাবলী এবং এখতিয়ার নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগ রয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগ মূল মামলা, আপীল ও অন্যান্য বিচারকার্য সম্পাদন করে এবং সংবিধান কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করে। হাইকোর্টের কার্যক্রম দেশের বিচার ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিচালনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

  • *কলকাতা হাইকোর্ট থেকে ঢাকা হাইকোর্ট:** প্রাথমিকভাবে কলকাতা হাইকোর্ট সমগ্র বাংলার জন্য কার্যকর ছিল। পাকিস্তান আমলে ঢাকায় একটি পৃথক হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পূর্ব বাংলার জনগণের বিচার প্রক্রিয়ার সুবিধা নিশ্চিত হয়েছিল। বর্তমান বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এই ঐতিহ্য বহন করে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৮৬১ সালে হাইকোর্টস অ্যাক্টের মাধ্যমে প্রথম হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠা।
  • কলকাতা হাইকোর্ট প্রথমে সমগ্র বাংলার জন্য কার্যকর ছিল।
  • ১৯৪৭ সালে ঢাকায় হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠা।
  • বাংলাদেশের সংবিধানে সুপ্রিম কোর্টের অংশ হিসেবে হাইকোর্টের কার্যক্রম।
  • হাইকোর্ট দেশের বিচার ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।