হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর: বাংলাদেশের আকাশপথের প্রবেশদ্বার
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কুর্মিটোলায় অবস্থিত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (DAC, VGHS) দেশের সবচেয়ে বড় এবং ব্যস্ততম বিমানবন্দর। এটি দেশের অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৮০ সালে এর যাত্রা শুরু হলেও, এর ইতিহাস অনেক পুরোনো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ সরকার কুর্মিটোলায় একটি রানওয়ে নির্মাণ করে। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান আমলে নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয় এবং ফরাসি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় কাজ শুরু হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিমানবন্দরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কিন্তু স্বাধীনতার পর পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ১৯৮০ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর উদ্বোধন করেন। তখন এর নাম ছিল জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এর নাম পরিবর্তন করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাখে।
১৯৮১ একর জমির উপর অবস্থিত এই বিমানবন্দর দিয়ে প্রায় ৫২% আন্তর্জাতিক ও আভ্যন্তরীন ফ্লাইট পরিচালিত হয়। বার্ষিক প্রায় ৪০ লক্ষ আন্তর্জাতিক ও ১০ লক্ষ অভ্যন্তরীন যাত্রী এবং ১৫০,০০০ টন ডাক ও মালামাল এই বিমানবন্দর ব্যবহার করে। এটি বাংলাদেশের সকল বিমান সংস্থার প্রধান ঘাঁটি, এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এখান থেকে ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন শহরে উড়ান পরিচালনা করে। এটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বঙ্গবন্ধু ঘাঁটি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
বিমানবন্দরটির ব্যস্ততা ও আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে। যাত্রীদের আরাম ও সুবিধার্থে নতুন টার্মিনাল ও অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কেবলমাত্র একটি বিমানবন্দর নয়, এটি বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রতীক।