সৈয়দ মাহমুদুল হাসান

আপডেট: ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৪৪ এএম

সৈয়দ মাহমুদুল হাসান: একজন প্রখ্যাত দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, লেখক ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব

সৈয়দ মাহমুদুল হাসান (জন্ম: ৫ জুলাই ১৯৫০) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, লেখক ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তিনি কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সংস্থা আল হাইআতুল উলয়া এবং সর্ববৃহৎ শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ার মহাপরিচালক, গুলশান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব, মাসিক আল জামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক এবং মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের আমীর। তাঁর রচিত বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থের নাম ‘তাফসীরে বুরহানুল কুরআন’।

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষাজীবন:

মাহমুদুল হাসান ১৯৫০ সালের ৫ জুলাই ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালি থানার চরখরিচা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন গালিমুদ্দিন আহমদ এবং মাতা ফাতেমা রমজানী। নিজ গ্রামেই কুরআন ও প্রাথমিক বাংলা শিক্ষা শেষ করে তিনি ময়মনসিংহের জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন। পিতা-মাতার মৃত্যুর পর তিনি ময়মনসিংহের জামিয়া আরাবিয়া আশরাফুল উলুম বালিয়া মাদ্রাসায় ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। ১৯৬৭ সালে জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগে অধ্যয়নকালে মাদ্রাসার মহাপরিচালক শামসুল হক ফরিদপুরী তাঁকে পাকিস্তানের মুহাম্মদ ইউসুফ বিন্নুরীর সান্নিধ্যে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালে তিনি পাকিস্তানের জামিয়া উলুমুল ইসলামিয়ায় ভর্তি হন এবং ১৯৬৯ সালে মুহাম্মদ ইউসুফ বিন্নুরীর তত্ত্বাবধানে সহীহ বুখারী অধ্যয়ন করেন। বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং ২৮ দিনে কুরআন মুখস্ত করেন।

কর্মজীবন ও অবদান:

শিক্ষাজীবন শেষ করে তিনি যশোর রেলস্টেশন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে যাত্রাবাড়ি মাদ্রাসায় যোগদান করেন এবং ১৯৮০ সালে মহাপরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হন। বর্তমানে তিনি গুলশান সেন্ট্রাল আজাদ মসজিদ ও ঈদগাহ সোসাইটির খতীব এবং মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের আমীর। ২০০৯ সালে মক্কার ‘আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার’ এর প্রধান ড. আহমদ আল গামেদীর এক মতামতের বিরোধিতা করে তিনি ‘আর রদ্দুল জামিল’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। ২০২০ সালে তিনি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি আরবি, বাংলা ও উর্দুতে শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং ১৯৮৩ সালে মাসিক আল জামিয়া নামে একটি সাময়িকী চালু করেন। তার শিষ্যদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন দেশের মসজিদের খতিব ও ধর্মীয় নেতা।

আধ্যাত্মিক সম্পর্ক:

তিনি ভারত, কুয়েত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের সাথে আধ্যাত্মিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন এবং খেলাফত লাভ করেন।

মূল তথ্যাবলী:

  • কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সংস্থা আল হাইয়াতুল উলয়ার সভাপতি
  • বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সভাপতি
  • জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ার মহাপরিচালক
  • গুলশান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব
  • তাফসীরে বুরহানুল কুরআনের রচয়িতা

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।