সুরিন্দর খান্না: একজন অসাধারণ উইকেট-রক্ষক ও ব্যাটসম্যান
সুরিন্দর চমনলাল খান্না (জন্ম: ৩ জুন, ১৯৫৬) একজন সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। তিনি ১৯৭০-এর দশকের শেষভাগ থেকে ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কালে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে তিনি দিল্লি দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন এবং ডানহাতে মাঝারিসারিতে ব্যাটিং করতেন।
খেলোয়াড়ী জীবন:
সুরিন্দর খান্নার প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন ১৯৭৬-৭৭ মৌসুম থেকে ১৯৮৭-৮৮ মৌসুম পর্যন্ত ছিল। তিনি দক্ষ উইকেট-রক্ষক ও মাঝারিসারির একজন দারুণ ব্যাটসম্যান ছিলেন। ১৯৭০-এর দশকের শেষদিক থেকে ১৯৮০-এর দশকের সূচনাকাল পর্যন্ত দিল্লি দলের প্রধান চালিকাশক্তি ছিলেন। রঞ্জি ট্রফিতে দিল্লির হয়ে খেলার মাধ্যমে ১৯৭৬ সালে তার অভিষেক ঘটে। ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত রঞ্জি ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় কর্ণাটকের বিরুদ্ধে উভয় ইনিংসে শতরান করে তিনি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ঐ মৌসুমে ৭৩.০০ গড়ে ৬৫৭ রান তুলে দিল্লির জাতীয় প্রতিযোগিতায় প্রথম শিরোপা বিজয়ে অবদান রাখেন।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার:
সুরিন্দর খান্না মাত্র ১০ টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৯ জুন, ১৯৭৯ তারিখে বার্মিংহামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তার ওডিআই অভিষেক ঘটে। ১২ অক্টোবর, ১৯৮৪ তারিখে কোয়েটায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তার সর্বশেষ ওডিআই ম্যাচ ছিল। তাকে কোন টেস্ট ম্যাচে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। ১৯৭৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের উইকেট-রক্ষক হিসেবে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে তেমন সফলতা পাননি। ১৯৮৪ সালে শারজায় অনুষ্ঠিত রথম্যান্স এশিয়া কাপে ভারত দলে ফিরে আসেন তিনি। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অর্ধ-শতরানের ইনিংস খেলে ভারতের শিরোপা জয় এবং ‘ম্যান অব দ্য সিরিজ’ পুরস্কার অর্জন করেন। একই বছরের অক্টোবরে পাকিস্তান সফরে অংশ নেন। কিন্তু প্রথম ওডিআইয়ে পরাজয়ের পর তাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়।
ঘরোয়া ক্রিকেটে অবদান:
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হলেও দিল্লির পক্ষে রানের ধারা অব্যাহত রাখেন। পাঁচ হাজারের বেশি প্রথম-শ্রেণীর রান করে খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি টানেন। ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে হিমাচলপ্রদেশের বিরুদ্ধে অপরাজিত ২২০ রান তুলেন। অবসরের সময় রঞ্জি ট্রফিতে ৪৮.৬৫ গড়ে ৪৩৩০ রান করেছিলেন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯২ সময়কালে স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে পেশাদার ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন। এখন তিনি এআইআরের স্টুডিওতে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় আছেন।