সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী (৮ মে ১৯৩৫ - ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের সাথে দীর্ঘদিন যুক্ত থাকার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ছিলেন এবং জাতীয় সংসদের উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি দেশের জনগণের জন্য কাজ করেছেন।
সাজেদা চৌধুরীর জন্ম মাগুরা জেলায়। শিক্ষাজীবনের পর তিনি ১৯৫৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধেও তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন।
স্বাধীনতার পর তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক এবং ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ গার্ল গাইডের জাতীয় কমিশনার হিসেবে কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৬ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ এর দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি ১৯৯১, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে ফরিদপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং পরবর্তীতে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় তিনি মন্ত্রী হিসেবেও কাজ করেছেন। জাতীয় সংসদের উপনেতা হিসেবে তিনি দীর্ঘ সময় দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান।
তার জীবনে তিনি বিভিন্ন সম্মাননা ও পুরস্কারে ভূষিত হন। যেমন, ১৯৭৪ সালে ইউনেস্কো ফেলোশিপ, বাংলাদেশ গার্ল-গাইড এসোসিয়েশনের সর্বোচ্চ সম্মানসূচক সনদ সিলভার এলিফ্যান্ট পদক ও ২০১০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার। তার জীবন একটি প্রেরণার উৎস হিসেবে থাকবে আগামী প্রজন্মের জন্য।