সম্মেলন

কাগমারি সম্মেলন ও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র: দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের কাহিনী

বাংলাদেশের ইতিহাসে সম্মেলনগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দুটি উল্লেখযোগ্য সম্মেলন হলো ১৯৫৭ সালের কাগমারি সম্মেলন এবং বর্তমান বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন।

  • *কাগমারি সম্মেলন (১৯৫৭):** টাঙ্গাইলের কাগমারিতে ১৯৫৭ সালের ৬-১০ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এই আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন ও সাংস্কৃতিক সম্মেলন পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। মূল আলোচ্য বিষয় ছিল পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন এবং জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি। তবে, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সিয়াটো ও সেন্টোর প্রতি সমর্থন আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে মতবিরোধ সৃষ্টি করে। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী নেতৃত্বে বামপন্থীরা সোহরাওয়ার্দীর নীতির তীব্র বিরোধিতা করেন। শেখ মুজিবুর রহমান সহ ডানপন্থীরা সোহরাওয়ার্দীর সমর্থনে ছিলেন। এই মতবিরোধ আওয়ামী লীগের ভেতরে ফাটল ধরায় এবং পরবর্তীতে ভাসানী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করেন।
  • *বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র:** ঢাকার শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এই আধুনিক সম্মেলন কেন্দ্রটি ২০০২ সালে ১১৪ সদস্যের জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের ত্রয়োদশ শীর্ষ সম্মেলনের জন্য নির্মিত হয়। চীনের অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মিত এই কেন্দ্রটি ৫০,০০০ বর্গমিটার জমির উপর অবস্থিত। এর প্রধান কক্ষে ১৭০০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে। এই কেন্দ্রটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন, সেমিনার এবং অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য ব্যবহৃত হয়।

দুটি সম্মেলনের ইতিহাস বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৫৭ সালে টাঙ্গাইলের কাগমারিতে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
  • কাগমারি সম্মেলনে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ও জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি ছিল মূল আলোচ্য বিষয়।
  • সোহরাওয়ার্দীর সামরিক জোটের সমর্থন আওয়ামী লীগে মতবিরোধ সৃষ্টি করে।
  • মওলানা ভাসানী ও শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে মতবিরোধ চরম আকার ধারণ করে।
  • বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র ২০০২ সালে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের শীর্ষ সম্মেলনের জন্য নির্মিত হয়।