বাংলাদেশের শিক্ষা প্রশাসন একটি জটিল ও বহুস্তরীয় ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার সর্বোচ্চ পর্যায়ে দুটি প্রধান প্রতিষ্ঠান কাজ করে: শিক্ষা মন্ত্রণালয় (MOE) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ (PMED)। এমওই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, উচ্চ শিক্ষা, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার নীতি নির্ধারণ এবং তদারকি করে। পিএমইডি প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার দায়িত্ব পালন করে।
এই দুই প্রতিষ্ঠানের অধীনে বিভিন্ন অধিদপ্তর, পেশাগত প্রতিষ্ঠান ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা কাজ করে। উল্লেখযোগ্য অধিদপ্তরগুলির মধ্যে রয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (DSHE), কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর (DTE), প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (DPE), উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তর (DNFE), পরিদর্শন ও অডিট অধিদপ্তর (DIA), এবং ফ্যাসিলিটিজ বিভাগ (FD)। পেশাগত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমী (NAEM), বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (BANBEIS), এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমী (NAPE)। আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার মধ্যে রয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (NCTB), মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (BISE), কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (TEB), মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (MEB), বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (UGC), এবং বাংলাদেশ কারিগরি ইনস্টিটিউট পরিষদ (BIT)।
শিক্ষা প্রশাসনের কাঠামো জেলা, উপজেলা ও স্থানীয় পর্যায়েও বিস্তৃত। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির তত্ত্বাবধানের জন্য স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি (SMC) রয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটি বা পরিচালনা পরিষদ (GB) রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি সরাসরি অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে থাকে।
১৯৯০ সালে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন এবং ১৯৯২ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের প্রতিষ্ঠা শিক্ষা প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বিকেন্দ্রীকরণের জন্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। তবে, শিক্ষা প্রশাসন এখনও বেশ কেন্দ্রীভূত; মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ক্ষমতা সীমিত।