ঐতিহাসিক শাঁখারিবাজার: ঢাকার এক অমূল্য সম্পদ
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যের ধারক শাঁখারিবাজার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান। বুড়িগঙ্গা নদীর কাছে ইসলামপুর রোড ও নওয়াবপুর রোডের সংযোগস্থলে অবস্থিত এই এলাকাটির নামকরণ হয়েছে এখানে বসবাসকারী শাঁখারী সম্প্রদায়ের নামানুসারে। বংশ পরম্পরায় শাঁখা তৈরির কাজে নিয়োজিত এই সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য এলাকাটি এখনও ধারণ করে আছে।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
ধারণা করা হয়, বল্লাল সেনের শাসনামলে শাঁখারীরা পূর্ববঙ্গে আগমন করে এবং বিক্রমপুরে একটি বাজারে বসতি স্থাপন করে। পরবর্তীতে, ১৭ শতকে মোগল শাসনামলে তাদেরকে খাজনা মুক্ত লাখেরাজ জমি দিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ঢাকায় এসে তারা শাঁখারিবাজারে বসতি স্থাপন করে। জেমস ওয়াইজের ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের বর্ণনা অনুসারে, ঢাকায় ঐ সময় ৮৩৫ জন শাঁখারী বসবাস করতেন। সপ্তদশ শতকের মোগল সুবেদার ইসলাম খাঁর সেনাপতি মির্জা নাথানের লেখায়ও শাঁখারিবাজারের উল্লেখ পাওয়া যায়।
১৯৭১ এর ঘটনা:
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শাঁখারিবাজারে ব্যাপক গণহত্যা চালায়। স্বাধীনতার পর শাঁখারীরা আবার সেই এলাকায় ফিরে আসে এবং তাদের ঐতিহ্য ধারণ করে।
স্থাপত্য:
শাঁখারিবাজারের বাসগৃহের স্থাপত্য অনন্য। জেমস ওয়াইজের মতে, তাদের লাখেরাজ জমির আয়তন সীমিত থাকার কারণে বাসগৃহগুলো ছোট আকারের নির্মিত হত। বেশিরভাগ বাসগৃহই চারতলা। দুই বাড়ির মাঝে দেয়াল লেগে থাকত এবং কোনো ফাঁকা জায়গা থাকত না।
বর্তমান অবস্থা:
বর্তমানে শাঁখারিবাজার এখনও ঐতিহ্যের ধারক। তবে যুগের পরিবর্তনে অনেক শাঁখারী অন্যান্য পেশায় যুক্ত হয়েছে। শাঁখার ব্যবসা ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। শাঁখারিবাজার এর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
বিঃদ্রঃ শাঁখারিবাজার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পেলে আমরা এই লেখাটি আপডেট করব।