লিয়াকত আলী

লিয়াকত আলী খান: পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী

লিয়াকত আলী খান (১৮৯৬-১৯৫১) পাকিস্তানের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নেতা। পূর্ব পাঞ্জাবের কার্নালে জন্মগ্রহণকারী এই ব্যক্তি পাকিস্তানের সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আলীগড় কলেজ থেকে আই.এ (১৯১৯) এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯২২ সালে তিনি লন্ডনের ইনার টেম্পল থেকে ব্যারিস্টার হন।

১৯২৪ সালে মুসলিম লীগে যোগদানের পর, লিয়াকত আলী খান ধীরে ধীরে দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৩৬ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ভারত বিভাগের পর, নব সৃষ্ট পাকিস্তানের প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক কাঠামো গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৭ সালের আগস্টে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন।

তার রাজনৈতিক জীবনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো ১৯৫০ সালের ৮ই এপ্রিল ভারতের সাথে লিয়াকত-নেহেরু চুক্তি স্বাক্ষর। এই চুক্তি দুই দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে করা হয়েছিল। তিনি ১৯৫০ সালে পাকিস্তানের মৌলিক নীতির ওপর একটি রিপোর্টও তৈরি করেন যা দেশটির ভবিষ্যৎ সংবিধানের রূপরেখা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু এই রিপোর্ট পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের কাছে স্বার্থবিরোধী বলে মনে করা হয়।

১৯৫১ সালের ১৬ই অক্টোবর রাওয়ালপিন্ডিতে এক জনসভায় বক্তৃতা দানকালে এক আততায়ীর গুলিতে তিনি নিহত হন। তার অনুসারীরা তাকে ‘কায়েদে-ই-মিল্লাত’ (জাতির নেতা) উপাধিতে ভূষিত করে। লিয়াকত আলী খানের মৃত্যু পাকিস্তানের রাজনীতিতে এক অন্ধকার অধ্যায়ের সূচনা করে। তাঁর অবদান আজও পাকিস্তানের ইতিহাসে স্মরণীয়।

মূল তথ্যাবলী:

  • লিয়াকত আলী খান ছিলেন পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।
  • তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন।
  • তিনি ভারত ও পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য লিয়াকত-নেহেরু চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
  • তিনি ১৯৫১ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন।
  • তার অনুসারীরা তাকে ‘কায়েদে-ই-মিল্লাত’ উপাধিতে ভূষিত করে।