রাষ্ট্র সংস্কার কমিশন

আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮:৫৯ এএম

বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কার কমিশন: একটি বিশ্লেষণ

গত ৫ই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশে রাষ্ট্র ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কারের দাবি উঠেছে। এই দাবিকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কিছু ‘সংস্কার কমিশন’ গঠন করেছে। এই কমিশনগুলোর মধ্যে রয়েছে সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এই প্রতিবেদনে আমরা এই কমিশনগুলোর কার্যকলাপ এবং সংস্কারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করবো।

সংবিধান সংস্কার কমিশন:

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধানের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমানো ইত্যাদি। কমিশন বিভিন্ন অংশীজনের সাথে বৈঠক করে তাদের মতামত গ্রহণ করেছে। অনলাইনেও নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহ করা হয়েছে, যদিও সেই সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন:

ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন এই কমিশন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন পরিবর্তন, স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাতিল, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রদান, ইভিএম ব্যবহার বাতিল ইত্যাদি। কমিশন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথেও আলোচনা করেছে।

পুলিশ সংস্কার কমিশন:

সরফ রাজ হোসেনের নেতৃত্বাধীন এই কমিশন পুলিশ ব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন, জবাবদিহিতা ও পেশাদারিত্ব বৃদ্ধি, জনকল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং পুলিশের অপকর্ম রোধে নানা প্রস্তাব দিয়েছে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনমত জরিপও করা হয়েছে।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন:

আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে এই কমিশন দুর্নীতি বন্ধ, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, বিকেন্দ্রীকরণ এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা মানার উপর জোর দিয়েছে। তারা বিভিন্ন স্তরে বৈঠক করে জনমত সংগ্রহ করেছে।

চ্যালেঞ্জ ও প্রশ্ন:

এই সংস্কার কমিশনগুলোর কাজ শুধুমাত্র প্রস্তাবনা দেওয়া। শেষ পর্যন্ত এই প্রস্তাবনাগুলো কতখানি বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি ও ঐক্য অর্জন এই প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, কমিশনগুলোর প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে পরস্পরবিরোধী বা সংঘাতমূলক ধারা থাকলে তা বাস্তবায়নে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

উপসংহার:

বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কার একটি জটিল ও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাবনা এই প্রক্রিয়ার এক মাত্র পদক্ষেপ। সুষ্ঠু এবং সার্বিক সংস্কার সাধনের জন্য রাজনৈতিক ঐক্য, জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় অপরিহার্য।

মূল তথ্যাবলী:

  • গণঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকার কমিশন গঠন করেছে।
  • সংবিধান, নির্বাচন, পুলিশ ও জনপ্রশাসন সংস্কারের উপর কমিশন কাজ করছে।
  • প্রস্তাবনায় পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, ইভিএম বাতিল, পুলিশ সংস্কার, প্রশাসনে স্বচ্ছতা প্রভৃতি বিষয় রয়েছে।
  • রাজনৈতিক ঐক্য ও জনসাধারণের অংশগ্রহণ সংস্কারের জন্য অপরিহার্য।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - রাষ্ট্র সংস্কার কমিশন

১ জানুয়ারী ২০২৫

রাষ্ট্র সংস্কার কমিশনগুলো ২০২৫ সালে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে।

১ জানুয়ারী ২০২৪, ৬:০০ এএম

এই বছর রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য বেশ কিছু কমিশন গঠিত হয়।

৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

রাষ্ট্র সংস্কার কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে।