ম্যানিলা: ফিলিপাইনের রাজধানী ও দ্বিতীয় জনবহুল শহর
ম্যানিলা (Maynila) ফিলিপাইনের রাজধানী এবং দেশটির দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল শহর (কিউজন সিটির পর)। লুজন দ্বীপের ম্যানিলা উপসাগরের পূর্ব তীরে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক শহরটি বিশ্বের সবচেয়ে জনঘনত্বপূর্ণ শহরগুলির মধ্যে একটি। ৩১ জুলাই ১৯০১ সালে ফিলিপাইন কমিশন আইন অনুযায়ী এটি শহর হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং ১৮ জুলাই ১৯৪৯ সালে স্বায়ত্তশাসন লাভ করে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
২৪ জুন ১৫৭১ সালে স্প্যানিশ অভিযাত্রী মিগুয়েল লোপেজ ডি লেগাজপি ম্যানিলা দখল করেন এবং স্পেনীয় ইস্ট ইন্ডিজের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন। ইনট্রামুরোস, ম্যানিলার প্রাচীন প্রাচীরবেষ্টিত অঞ্চল, স্প্যানিশ উপনিবেশের প্রধান কেন্দ্র ছিল। ম্যানিলা-একাপুল্কো গ্যালিয়ন ব্যবসায়ের মাধ্যমে এটি দীর্ঘদিন ঐশ্বর্যের সাক্ষী ছিল, যা ইউরোপ, এশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্থাপন করেছিল। ১৭৬২ সালে ব্রিটিশরা কিছুদিন ম্যানিলা দখল করেছিল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ম্যানিলা ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছিল।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা:
পাসিগ নদী ম্যানিলাকে উত্তর ও দক্ষিণে দুই ভাগে বিভক্ত করে। শহরটি ১৬ টি প্রশাসনিক জেলায় বিভক্ত, যার মধ্যে রয়েছে বিনোন্দো, এরমিটা, ইনট্রামুরোস, পোর্ট এরিয়া, সান্টা আনা ইত্যাদি। ২০১৫ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী শহরটিতে প্রায় ১,৭৮০,১৪৮ জন বাস করত, এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব বিশ্বে সর্বোচ্চ।
অর্থনীতি:
ম্যানিলার অর্থনীতি ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন, বীমা, ব্যাংকিং, এবং বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনের উপর নির্ভরশীল। ম্যানিলা বন্দর ফিলিপাইনের সবচেয়ে বড় বন্দর এবং দেশের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র।
সমস্যা:
ম্যানিলার মুখোমুখি প্রধানত দারিদ্র্য, অপরাধ, মাদকাসক্তি, এবং বায়ুদূষণের মতো সমস্যা।
সংস্কৃতি:
স্প্যানিশ সংস্কৃতির প্রভাবের কারণে ম্যানিলা একটি খ্রিস্টান শহর। রোমান ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা অধিক। ম্যানিলায় অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপত্য, চার্চ এবং স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে।
উপসংহার:
ম্যানিলা ফিলিপাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর, যা ঐতিহাসিক গুরুত্ব, ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং অর্থনৈতিক কার্যকলাপের জন্য বিখ্যাত। তবে, দারিদ্র্য, অপরাধ, এবং পরিবেশগত সমস্যার মোকাবেলা করার জন্য এখানে চ্যালেঞ্জ রয়েছে।