পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সি এবং ভারতীয় গণমাধ্যমের মিথ্যাচার
গত ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সি এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় গণমাধ্যমের মিথ্যাচারের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, ভারতীয় মিডিয়া পঞ্চগড়ের এক ১৫ বছর বয়সী কিশোরী প্রিয়ন্তী রায় প্রমি (অর্পিতা) কে কেন্দ্র করে মিথ্যাচার করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে মুন্সি জানান, ৯ ডিসেম্বর ওই কিশোরী তার পরিবারের কাউকে না জানিয়ে মামাবাড়িতে যায় এবং পরে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করে। চোখের সমস্যা থাকায় সে ভারতে চিকিৎসা নিতে চেয়েছিল, কিন্তু ভিসা না পেয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করে। ভোররাতে বিএসএফের হাতে আটক হওয়ার পর তাকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার চপড়ামারী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে এক আত্মীয়ের সাহায্যে তার পরিচয় প্রকাশিত হলে তাকে আদালতের নির্দেশে সেফহোমে পাঠানো হয়।
ভারতীয় গণমাধ্যম ‘আর বাংলা’সহ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে ওই কিশোরীকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করা হয়। এই সংবাদগুলোতে অভিযোগ করা হয় যে কিশোরী ইসকন ভক্ত এবং বাংলাদেশে তাকে অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছে। এই মিথ্যাচারের ফলে কিশোরীর পরিবার তীব্র মানসিক কষ্টের শিকার হয় এবং তাদের সন্তানকে ফিরে পেতে পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সি জানান, তদন্তে পুলিশ এ সংবাদগুলোর কোনো সত্যতা খুঁজে পায়নি। তিনি ভারতীয় মিডিয়ার এই মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা বলেও উল্লেখ করেন।
পঞ্চগড়ের হিন্দু নেতারাও ভারতীয় মিডিয়ার এই প্রতিবেদনগুলোকে মিথ্যা এবং বানোয়াট বলে উল্লেখ করেন। তারা জানান পঞ্চগড়ে হিন্দু সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে এবং কোন ধরণের অত্যাচার বা নির্যাতনের ঘটনা নেই।
এই ঘটনায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সি'র ভূমিকা ছিল কিশোরীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের অভিযোগ গ্রহণ করা এবং ভারতীয় মিডিয়ার মিথ্যাচারের বিষয়টি উন্মোচন করা। তিনি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।