মোস্তাফিজ কারিগর: একজন শিল্পী ও লেখকের অসাধারণ যাত্রা
মোস্তাফিজ কারিগর বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও লেখক। তিনি প্রধানত বইয়ের প্রচ্ছদ নির্মাণের জন্য পরিচিত, তবে তাঁর নিজস্ব লেখালেখি ও চিত্রকর্মের জন্যও তিনি সমাদৃত। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা চিত্রকলায়, তবে রঙতুলি, ক্যানভাস, ডিজিটাল মাধ্যমের বাইরেও তিনি কবিতা, ছোটগল্প ও উপন্যাস রচনা করেন। এ পর্যন্ত তিনি ৫ থেকে ৬ হাজার বইয়ের প্রচ্ছদ নির্মাণ করেছেন বলে জানা যায়। তাঁর অসংখ্য কবিতা, ছোটগল্প ও উপন্যাসের বই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ২০১৫ সালে ‘বস্তুবর্গ’ উপন্যাসের জন্য জেমকন সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। ২০২৩ সালে কলকাতা থেকে ‘বস্তুবর্গ’র ভারতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। তিনি দীর্ঘদিন ঢাকায় বসবাসের পর কুষ্টিয়ায় পরিবারের সাথে বসবাস করছেন। ঢাকা শহরের জীবনযাত্রার অস্বস্তির কথা উল্লেখ করে তিনি কুষ্টিয়ার প্রাকৃতিক পরিবেশকে তার কাজের পক্ষে ইতিবাচক বলে মনে করেন। বর্তমানে তিনি নতুন কবিতা, গল্প এবং উপন্যাস রচনার পাশাপাশি, প্রদর্শনীর জন্য চিত্রকর্মের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
কীভাবে তিনি বইয়ের প্রচ্ছদ নির্মাণ করেন?
মোস্তাফিজ কারিগরের মতে, একটি বড় উপন্যাসের গল্পকে সামান্য প্রচ্ছদ আয়তনে ফুটিয়ে তোলা চ্যালেঞ্জিং। তিনি প্রচ্ছদ তৈরির পূর্বে বইয়ের সারমর্ম পড়ে, পুরো বিষয়বস্তুকে প্রতিনিধিত্ব করে এমন একটি চিত্র আঁকার চেষ্টা করেন যাতে পাঠকের সাথে প্রাথমিক যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। তবে তিনি এও মনে করেন যে, প্রচ্ছদ বইয়ের বিষয়ের সাথে হুবহু মিল থাকতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
শিল্পী ও লেখক- কোন পরিচয় বেশি পছন্দ?
মোস্তাফিজ কারিগর লেখক ও শিল্পীকে দুটি আলাদা সত্তা মনে করেন না, বরং একই সত্তার দুটি প্রকাশ মাধ্যম মনে করেন। তার সৃষ্টিশীলতা লেখার মাধ্যমে কিংবা চিত্রকর্মের মাধ্যমে আনন্দ খুঁজে পায়।
কাজের অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা
তিনি লেখক, কবি এবং প্রকাশকদের সাথে কাজ করে অনেক সুন্দর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তবে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা ও কাজের অসুবিধার কথাও তিনি বলেছেন। প্রতি বছর বইমেলাকে কেন্দ্র করে এক মাসে প্রচুর বইয়ের প্রচ্ছদ করতে হয়, যা একটি সুষ্ঠু কাজের প্রক্রিয়া নয় বলে তিনি মনে করেন। বাংলাদেশের শিল্প ও সাহিত্যের বর্তমান অবস্থা বিষয়ে তিনি হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি খ্যাতি নয়, কাজ করে যাওয়াকেই সাফল্য হিসাবে মনে করেন।