মোংলা সমুদ্র বন্দর

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

মোংলা সমুদ্র বন্দর: বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর খুলনার চালনায় প্রতিষ্ঠিত হলেও পরবর্তীতে ভৌগোলিক সুবিধার জন্য বাগেরহাটের মোংলায় স্থানান্তরিত হয়। পশুর নদীর গভীরতা এবং নাব্যতা বন্দরের ব্যবহারকে অধিক সুবিধাজনক করে তুলেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের পরেই এটি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র বন্দর হিসেবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ভারত, নেপাল ও ভুটানের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করেছে। বর্তমানে বন্দরটি আধুনিকায়নের মাধ্যমে এর ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। মোংলা বন্দরের অবস্থান সুন্দরবন অরণ্যের কাছাকাছি হওয়ায় পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে বিবেচিত হয়।

মোংলা সমুদ্র বন্দরের ইতিহাস: প্রাথমিকভাবে 'চালনা বন্দর' নামে পরিচিত ছিল। ১৯৫০ সালের ১১ ডিসেম্বর ‘দ্য সিটি অব লিয়ন্স’ নামক ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজের আগমনের মাধ্যমে বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৫৪ সালে মোংলায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর 'মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ' নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে। দীর্ঘদিন ধরে নাব্যতার সমস্যায় বন্দরটির কার্যক্রম ব্যাহত হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে খনন কার্যক্রম ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এই সমস্যা কিছুটা সমাধান হয়েছে।

মোংলা সমুদ্র বন্দরের অবকাঠামো: বন্দরে ১১টি জেটি, ৭টি শেড, ৮টি ওয়্যারহাউজ এবং ১২টি ভাসমান নোঙরস্থান রয়েছে। রেলপথের মাধ্যমে খুলনা মহানগরী ও দেশের অন্যান্য স্থানের সাথে যুক্ত। নাবিকদের জন্য হিরণ পয়েন্টে একটি রেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। বন্দরের কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা চালু থাকে এবং ২২৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা জাহাজ প্রবেশ করতে পারে।

মোংলা সমুদ্র বন্দরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব: এটি দেশের আমদানি-রপ্তানির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বছরে প্রায় ৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন পণ্যের আমদানি-রপ্তানি হয়। বন্দরের উন্নয়নের মাধ্যমে কার্গো পরিবহন, কনটেইনার হ্যান্ডলিং ও অন্যান্য বাণিজ্যিক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হচ্ছে। আঞ্চলিক বাণিজ্যের একটি কেন্দ্র হিসেবে মোংলা বন্দরের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর
  • খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত
  • চট্টগ্রাম বন্দরের পর দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র বন্দর
  • আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
  • বন্দরের উন্নয়ন ও ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।