মেলবোর্ন বিমানবন্দর (Melbourne Airport), আনুষ্ঠানিকভাবে তুল্লামেরিন বিমানবন্দর নামে পরিচিত, অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের রাজধানী মেলবোর্ন শহরের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর হিসেবে এটি বিখ্যাত। ১৯৭০ সালে এসেনডন বিমানবন্দরের বদলে এটি চালু হয়। তুল্লামেরিন উপশহরে মেলবোর্ন শহরের কেন্দ্র থেকে ২৩ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এই বিমানবন্দরের নিজস্ব উপশহর এবং পোস্টকোড (৩০৪৫) রয়েছে।
বিমানবন্দরটিতে চারটি টার্মিনাল আছে: একটি আন্তর্জাতিক এবং দুটি আভ্যন্তরীণ টার্মিনাল এবং একটি বাজেট আভ্যন্তরীণ টার্মিনাল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে, আন্তর্জাতিক যাত্রী সংখ্যা ৮ মিলিয়নেরও বেশি ছিল। এখান থেকে ৩৩ টি আভ্যন্তরীণ গন্তব্য এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয়, ইউরোপীয়, এশীয়, উত্তর আমেরিকান এবং দক্ষিণ আমেরিকান দেশগুলিতে সরাসরি ফ্লাইট চলাচল করে। কুয়ান্টাস এবং ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া এয়ারলাইন্সের জন্য এটি একটি প্রধান কেন্দ্র।
মেলবোর্ন বিমানবন্দর নির্মাণের পূর্বে, মেলবোর্নের প্রধান বিমানবন্দর ছিল এসেনডন বিমানবন্দর, যা ১৯৫০ সালে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্ধনশীল যাত্রীসংখ্যা এবং বিমানের আকার বৃদ্ধির কারণে এসেনডন বিমানবন্দরের সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই অসুবিধা দূর করার জন্যই তুল্লামেরিনে একটি নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ১৯৫৯ সালে সরকার ৫,৩০০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করে এবং ১৯৭০ সালের ১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী জন গর্টন আনুষ্ঠানিকভাবে মেলবোর্ন বিমানবন্দর উদ্বোধন করেন।
বিমানবন্দরের উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। রানওয়ে সম্প্রসারণ, কার পার্কিং এর বৃদ্ধি, টার্মিনাল ভবন উন্নয়ন ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও, বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, যেমন ক্যাটাগরি III ল্যান্ডিং সিস্টেম, এয়ারবাস A380 এর জন্য প্রস্তুতি ইত্যাদি নেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তৃতীয় রানওয়ে নির্মাণের কাজ অনুমোদিত হয়েছে যার জন্য প্রায় ৩ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার ব্যয় হবে।
মেলবোর্ন বিমানবন্দর অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি অসংখ্য চাকরীর সৃষ্টি করেছে এবং প্রচুর পর্যটকদের মেলবোর্নে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। বিমানবন্দরটি দেশের অন্যান্য শহরগুলির সাথে মেলবোর্নকে যুক্ত করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।