মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের এক প্রভাবশালী নেতা
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। ১৯৪৮ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকার কাছে সাভারে জন্মগ্রহণকারী সেলিম স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৬ সালে আউযুব খানের বিরুদ্ধে মিছিলে অংশগ্রহণের কারণে তিনি কারাবরণও করেছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জনকারী সেলিম বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাধীনতার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এর প্রথম সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন যৌথ গেরিলা বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ছাত্রজীবন শেষে সেলিম কৃষকদের সংগঠিত করার দিকে মনোযোগ দেন। তিনি বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিক থেকে তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০১২ সালে পার্টির দশম কংগ্রেসে সভাপতি নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক কারণে তিনি প্রায় আট বছর কারাবরণ এবং আত্মগোপনে ছিলেন।
‘রাজনীতির নানা প্রসঙ্গ’, ‘মার্কসবাদ একটি চিরায়ত দর্শন’, ‘বিকল্পের কোনো বিকল্প নেই’ সহ বিভিন্ন গ্রন্থের রচয়িতা সেলিম রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লেখেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক কন্যা ও এক পুত্রের জনক।