ছত্তীসগড়ের তরুণ সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকরের রহস্যময় মৃত্যু এবং এর পেছনে থাকা ১২০ কোটি টাকার রাস্তা নির্মাণ কেলেঙ্কারির ঘটনাটি দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ৩ জানুয়ারি, বিজাপুরের বস্তারে এক ঠিকাদারের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করা হয়। মুকেশ চন্দ্রকর, একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও ইউটিউবার ছিলেন (তাঁর ‘বস্তার জংশন’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল ছিল যেখানে প্রায় ১.৫৯ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার ছিল), যিনি স্থানীয় দুর্নীতির বিষয়ে নির্ভীক সাংবাদিকতা করতেন।
তাঁর মৃত্যুর আগে, মুকেশ বস্তারে ৫০ কোটি টাকার একটি সরকারি রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। তাঁর প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, প্রকল্পের ব্যয় হঠাৎ করে ১২০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর, ছত্তীসগড় সরকার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল এবং প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
গত ১ জানুয়ারি, ঠিকাদার সুরেশ চন্দ্রকর (যিনি এই প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন) এবং তার ভাই রীতেশ চন্দ্রকর মুকেশকে একটি বৈঠকে ডেকেছিলেন। এই বৈঠকে যাওয়ার পর থেকেই মুকেশ নিখোঁজ ছিলেন। তদন্তে জানা যায়, মুকেশের খুলি, ঘাড়, লিভার, এবং পাঁজরের হাড় ভাঙ্গা ছিলো। হৃৎপিণ্ডেও আঘাতের চিহ্ন ছিল। মৃত্যুর পূর্বে সাংবাদিককে শ্বাসরোধ করা হয়েছিল।
পুলিশ তদন্তে রীতেশ চন্দ্রকরসহ আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে, প্রকল্পের ঠিকাদার সুরেশ চন্দ্রকরই মুকেশের হত্যার পিছনে মূল অভিযুক্ত। পরে, সিআইটি সুরেশকে হায়দরাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মুকেশের মৃত্যুর ঘটনায় ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাই শোক প্রকাশ করেছেন এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এই ঘটনার পর থেকেই সাংবাদিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করা হচ্ছে।