মানামা: বাহরাইনের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর
মানামা (আরবি: المنامة; [elmɐˈnɑːmɐ]) বাহরাইনের রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। এটি পারস্য উপসাগরের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি ছোট উপদ্বীপের উপর অবস্থিত। দেশের জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ (প্রায় ১৫৫,০০০) মানামায় বাস করে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
ইসলামী ইতিহাসে ১৩৪৫ খ্রিস্টাব্দে মানামার প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। পর্তুগিজরা ১৫২১ সালে এটি দখল করে এবং পরে ১৬০২ সালে পারস্যবাসীরা জয় করে। ১৭৮৩ সাল থেকে, কিছু সংক্ষিপ্ত ব্যতিক্রম ছাড়া, আল খলিফাহ রাজবংশ এটি শাসন করে আসছে। ১৯৫৮ সালে মানামা মুক্ত বন্দর হিসেবে ঘোষিত হয় এবং ১৯৭১ সালে বাহরাইনের রাজধানী হিসেবে ঘোষিত হয়।
অর্থনীতি:
প্রাথমিকভাবে মুক্তা ব্যবসা, মাছ ধরা, নৌকা নির্মাণ এবং আমদানি ব্যবসার উপর নির্ভরশীল ছিল। ১৯৩২ সালে তেলের আবিষ্কার মানামার অর্থনীতিতে বিপ্লব সাধন করে। বর্তমানে, এটি একটি উন্নত বাণিজ্যিক, আর্থিক ও পর্যটন কেন্দ্র, যেখানে অসংখ্য ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক কোম্পানীর সদর দপ্তর অবস্থিত। ১৯৫৮ সালে মুক্ত বন্দর হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পর, মানামার মীনা সালমান বন্দর পারস্য উপসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
ভৌগোলিক অবস্থান:
মানামা বাহরাইন দ্বীপপুঞ্জের উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত। এখানকার জলবায়ু মরুভূমি প্রকৃতির। গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ৪৫° সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে এবং শীতকালে ৭° সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।
সংস্কৃতি:
মানামা বাব আল বাহরাইন এবং সন্নিহিত বাজার এলাকা সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক স্থানের জন্য পরিচিত। শহরটিতে শিয়া ও সুন্নি উভয় ধর্মের মানুষ বসবাস করে।
পরিবহন:
মানামা বাহরাইনের সড়ক ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমানে, যানবাহন সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে, যানজট নিরসনে উন্নত সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন চলছে। মানামা মুহারাক দ্বীপের সাথে একটি কসওয়ে দ্বারা সংযুক্ত এবং বাহরাইন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মুহারাক দ্বীপে অবস্থিত।
শিক্ষা:
মানামায় বহু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন আহলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, এপ্লাইড সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়, আরব ওপেন বিশ্ববিদ্যালয়, আরব উপসাগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি।