মাধবপুর

মাধবপুর: হবিগঞ্জ জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা, প্রকৃতির কোলে সুন্দরভাবে অবস্থিত। ২৯৪.২৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলার উত্তরে লাখাই ও হবিগঞ্জ সদর, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা, পূর্বে চুনারুঘাট ও ভারতের ত্রিপুরা এবং পশ্চিমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও নাসিরনগর উপজেলা অবস্থিত। প্রায় ৩১৯,০১৬ জনসংখ্যার এই উপজেলায় মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে। মাটিয়াইন ও সাস্তি নদী এই উপজেলার প্রধান জলাশয়। ১৮০৪ সালে মাধবপুর থানা গঠিত হয়।

মাধবপুরের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত। ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল, তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ডাকবাংলোতে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল মো. আতাউল গনি ওসমানী মুক্তিযুদ্ধের নেতৃবৃন্দের সাথে গুরুত্বপূর্ণ সভা করেন। তেলিয়াপাড়া, হরিতলা, আন্দিউড়া, মনতলা, সুন্দরপুর, ধর্মঘর বাজার, হরষপুরসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে তীব্র যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তেলিয়াপাড়ায় একটি বধ্যভূমি ও স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে।

অর্থনীতিতে কৃষি প্রধান ভূমিকা পালন করে। ধান, আলু, পাট, সরিষা, ডাল, গম প্রধান ফসল। আম, জাম, পেঁপে, নারিকেল, কাঁঠাল প্রধান ফল। শিল্পের দিক দিয়ে টেক্সটাইল মিল, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, সাবান ও মোমবাতি কারখানা উল্লেখযোগ্য। মাধবপুর বাজার, নোয়াপাড়া বাজার, তেলিয়াপাড়া বাজার, মনতলা বাজার, জগদীশপুর বাজার ও ধর্মঘর বাজার গুরুত্বপূর্ণ বাজার। শিক্ষার দিক থেকে কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

মাধবপুরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করেছে শাহজীবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, নওয়াপাড়া, জগদীশপুর, তেলিয়াপাড়া ও সুরমা চা বাগান। এই উপজেলা প্রকৃতির অপূর্ব দান, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার জন্য পরিচিত। তবে, উন্নয়নের অনেক পথ এখনও অতিক্রম করতে হবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • মাধবপুর হবিগঞ্জ জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা।
  • ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মাধবপুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • কৃষি ও ক্ষুদ্র শিল্প মাধবপুরের অর্থনীতির মূল ভিত্তি।
  • ঐতিহাসিক স্থান ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য মাধবপুরকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।