মহাশ্মশান: কায়কোবাদের অমর মহাকাব্য
বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ হল কায়কোবাদের রচিত ‘মহাশ্মশান’ মহাকাব্য। ১৯০৪ সালে প্রকাশিত এই কাব্য বাংলা ১৩১১ বঙ্গাব্দে প্রথম আলো দেখে। প্রায় ৯০০ পৃষ্ঠার এই মর্মস্পর্শী কাব্যটি পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রচিত। তিন খণ্ডে বিভক্ত এই কাব্যে মোট ষাটটি সর্গ রয়েছে। প্রথম খণ্ডে ঊনত্রিশ, দ্বিতীয় খণ্ডে চব্বিশ এবং তৃতীয় খণ্ডে সাতটি সর্গ আছে।
১৭৬১ সালে সংঘটিত এই যুদ্ধে মারাঠা এবং আহমদ শাহ আবদালীর নেতৃত্বাধীন মুসলিম বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। যুদ্ধে মুসলমানদের জয় হলেও কবি কায়কোবাদ একে উভয় পক্ষেরই পরাজয় ও ধ্বংস হিসেবে দেখেছেন। তাই তিনি যুদ্ধের নাম দিয়েছেন ‘মহাশ্মশান’। যুদ্ধের সংঘাতের পাশাপাশি এই কাব্যে অনেকগুলি প্রণয়কাহিনী ও স্থান পেয়েছে।
‘কবির বীণা ও কল্পনা’ এবং ‘আল্লাহু আকবর’ নামক বন্দনা অংশ দিয়ে কাব্যটির শুরু। ‘ইব্রাহিম কার্দ্দি ও জোহরা বেগমের বাল্য জীবনের এক অধ্যায়’ শীর্ষক একটি সর্গও এই মহাকাব্যে আছে। ঐতিহাসিক চরিত্র ও ঘটনা নিয়ে রচিত এই কাব্যটি বাংলা সাহিত্যের একটি মাইলফলক। কায়কোবাদের মহাকবি খ্যাতির মূলে এই মহাকাব্যটির অবদান অপরিসীম। মহাশ্মশান কেবল একটি যুদ্ধকাহিনী নয়, এটি মানব জীবনের সংগ্রাম, প্রেম, এবং ধ্বংসের এক অসাধারণ চিত্রায়ন।