অস্ট্রেলিয়ার সান্নিধ্যে অবস্থিত, কুইন্সল্যান্ডের রাজধানী ব্রিসবেন একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ সমৃদ্ধ শহর। ১৮২৪ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর জেনারেল ও নিউ সাউথ ওয়েলসের তৎকালীন গভর্নর স্যার থমাস ব্রিসবেনের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। প্রথমদিকে অপরাধীদের বন্দিশালা হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, পরবর্তীতে এটি একটি বৃহৎ বন্দর ও অভিবাসন কেন্দ্রে পরিণত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, সাউথ ওয়েস্ট প্যাসিফিকের মিত্র বাহিনীর সদর দপ্তর এখানেই স্থাপিত হয়।
ব্রিসবেনের জনসংখ্যা প্রায় ২৭ লক্ষ, এটি অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর। শহরটি ব্রিসবেন নদীর তীরে অবস্থিত, এবং মোরটন উপসাগরের কাছে। নদীটি ব্রিসবেন শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে, এবং এর তীরে বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য স্থাপনা অবস্থিত, যেমন সংসদ ভবন, টাউন হল, ব্রিসবেন জাদুঘর এবং কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
অর্থনীতিতে, ব্রিসবেন খনিজ সম্পদ, ব্যাংকিং, বীমা, পরিবহন, তথ্য প্রযুক্তি, রিয়েল এস্টেট এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্রিসবেন পোর্ট অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় ব্যস্ততম সমুদ্রবন্দর। পর্যটনও ব্রিসবেনের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। শহরটিতে বহু নগর উদ্যান, আধুনিক দালান, ঐতিহাসিক ভবন এবং আধুনিক স্থাপত্য রয়েছে। সাউথ ব্যাংক এবং এর বিস্তীর্ণ পার্কল্যান্ডস অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্থলগুলির মধ্যে একটি।
ব্রিসবেন ১৯৮২ সালে কমনওয়েলথ গেমস, ১৯৮৮ সালে বিশ্ব এক্সপো'র মতো বড় বড় আন্তর্জাতিক কার্যক্রম আয়োজনের জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও ২০৩২ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক গেমসের আয়োজনের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। ব্রিসবেনের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলির মধ্যে রয়েছে ১৮৯৩ সালের ভয়াবহ বন্যা, ১৯৪২ সালের
ব্রিসবেন যুদ্ধ
এবং ফ্রজ হলোয়ের বিক্ষোভ (Frog's Hollow riots) । ব্রিসবেন এর জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশি, এটি একটি বহু সংস্কৃতি সমৃদ্ধ শহর। ব্রিসবেনের ভৌগোলিক অবস্থান, ঐতিহাসিক গুরুত্ব, সাংস্কৃতিক সম্পদ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন এটিকে অস্ট্রেলিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরে পরিণত করেছে।