ব্যাঙ্গালোর

বেঙ্গালুরু: ভারতের সিলিকন ভ্যালি

বেঙ্গালুরু, কর্ণাটকের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর, দক্ষিণ ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ মহানগর। 'ভারতের সিলিকন ভ্যালি' নামে খ্যাত এই শহরটি তথ্যপ্রযুক্তি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু। সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ৯০০ মিটার (৩,০০০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত এই শহরের আয়তন প্রায় ৭৪১ বর্গ কিলোমিটার।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব:

বেঙ্গালুরুর ইতিহাস সমৃদ্ধ। পশ্চিম গঙ্গা, চোল, হোয়সালা রাজবংশসহ বিভিন্ন রাজবংশ এখানে রাজত্ব করেছে। ১৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে কেম্পে গৌড়া নামে এক জমিদার এখানে একটি মাটির দুর্গ নির্মাণ করেন। ১৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে মারাঠা, পরে মুঘলদের অধীনে থাকার পর, ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধের পর ব্রিটিশদের অধীনে আসে। ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশরা বেঙ্গালুরু ক্যান্টনমেন্ট স্থাপন করে। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর মহীশূর রাজ্যের রাজধানী হিসেবে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। ১৯৫৬ সালে কর্ণাটক রাজ্য গঠনের পর বেঙ্গালুরু রাজধানীতে পরিণত হয়। ২০০৬ সালে এর কন্নড় নাম 'বেঙ্গালুরু' সরকারিভাবে গৃহীত হয়।

তথ্যপ্রযুক্তি ও অর্থনীতি:

বেঙ্গালুরু ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কেন্দ্রবিন্দু। ইনফোসিস, উইপ্রো, ইসরোর মতো বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর এখানে অবস্থিত। ২০০০-এর বেশি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা এই শহরে কার্যক্রম পরিচালনা করে। কৃষি ও উৎপাদন শিল্পের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প অর্থনীতির মূল ভিত্তি।

শিক্ষা ও সংস্কৃতি:

বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট ব্যাঙ্গালোর, হিন্দুস্তান এরোনটিক্স লিমিটেড, ভারত ইলেকট্রনিকস লিমিটেড সহ অনেক খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গবেষণা কেন্দ্র অবস্থিত। এটি কন্নড় চলচ্চিত্র শিল্পেরও কেন্দ্র।

অন্যান্য:

বেঙ্গালুরুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, খেলাধুলার সুযোগ-সুবিধা এবং জীবন্ত রাতের জীবন রয়েছে। এম. চিন্নাস্বামী ক্রিকেট স্টেডিয়াম এবং শ্রী কান্তিরাভা ফুটবল স্টেডিয়াম উল্লেখযোগ্য। কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মূল তথ্যাবলী:

  • বেঙ্গালুরু কর্ণাটকের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর
  • তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কেন্দ্রবিন্দু ('ভারতের সিলিকন ভ্যালি')
  • সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য
  • উন্নত অবকাঠামো ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমৃদ্ধ
  • জীবন্ত রাতের জীবন ও পর্যটন কেন্দ্র