বেসরকারি হাসপাতাল: বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের অবদান অপরিসীম। ব্রিটিশ আমল থেকেই সরকার স্বাস্থ্যসেবাকে গুরুত্ব দিয়ে আসলেও, বিশ শতকের নব্বই দশকের দিকে মুক্তবাজার অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার পর থেকেই চিকিৎসা খাত বেসরকারি উদ্যোগের দিকে ঝুঁকেছে। এখন দেশে অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, মেডিকেল সেন্টার এবং নার্সিং হোম রয়েছে, যা বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে।
এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির আকার ও সুযোগ-সুবিধা নানা রকম। ছোট, ১০-৫০ শয্যাবিশিষ্ট ক্লিনিক থেকে শুরু করে বড়, অত্যাধুনিক হাসপাতাল পর্যন্ত বিভিন্ন রকমের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অনেক ক্লিনিক সাধারণ চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের সুবিধা প্রদান করে, আবার অনেক ক্লিনিক চক্ষু, হৃদরোগ, বা অন্যান্য বিশেষায়িত চিকিৎসার উপর কেন্দ্রীভূত। এই হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় সদর, জেলা সদর এবং উপজেলা সদরে অবস্থিত, যদিও রাজধানী ঢাকাতেই এদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
কিছু বেসরকারি হাসপাতাল বেসরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত, এবং ব্রিটিশ আমল থেকে কিছু প্রাচীন হাসপাতালও এখনও কার্যকর। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকার কাছে মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতাল একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। অনেকেই প্রিয়জনের স্মৃতি রক্ষার্থে বেসরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করছেন, যদিও এর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। কমিউনিটি হাসপাতালও বেসরকারি অংশগ্রহণে পরিচালিত হচ্ছে।
রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। আধুনিক ইমেজিং, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, হরমোন ও সংক্রমণ পরীক্ষা ইত্যাদি সুবিধা এখন অনেক বেসরকারি ক্লিনিকেই পাওয়া যাচ্ছে। এই উন্নত সুবিধাগুলি উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণীর রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী, এবং এটি বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা কমিয়েছে। তবে, সার্বিকভাবে জনসংখ্যার তুলনায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা এখনও যথেষ্ট নয় এবং সারা দেশ জুড়ে সমানভাবে বিতরণ করাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।