বিশাখাপত্তনম: অন্ধ্রপ্রদেশের রত্ন
বিশাখাপত্তনম (তেলুগু: విశాఖపట్నం, পূর্বনাম বিজগাপত্তনম), ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের একটি প্রধান শহর ও বন্দর। এটি অন্ধ্রপ্রদেশের সর্বাধিক জনবহুল ও বৃহত্তম শহর এবং চেন্নাই ও কলকাতার পর ভারতের পূর্ব উপকূলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। পূর্ব ঘাট পর্বতমালা ও বঙ্গোপসাগরের মিলনস্থলে অবস্থিত এই শহরটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অসাধারণ।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
বিশাখাপত্তনমের ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে ফিরে যায়। কলিঙ্গ রাজ্যের অংশ হিসেবে এটি পরবর্তীতে ভেঙ্গি, পল্লব ও পূর্ব গঙ্গ রাজবংশের শাসনে ছিল। একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দীতে চোল রাজাদের অধীনে শহরটি বিকাশ লাভ করে। বিজয়নগর সাম্রাজ্য, মুঘলরা এবং পরে ইউরোপীয় শক্তিগুলির নিয়ন্ত্রণের পর ১৮০৪ সালে এটি ব্রিটিশদের অধীনে চলে আসে। প্রাচীনতম শিপইয়ার্ড ও ভারতের পূর্ব উপকূলে একমাত্র প্রাকৃতিক বন্দর হিসাবে বিশাখাপত্তনমের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন:
বিশাখাপত্তনম বন্দর ভারতের পঞ্চম ব্যস্ততম পণ্যবাহী বন্দর। এছাড়াও, এখানে দক্ষিণ উপকূলীয় রেলের সদর দফতর অবস্থিত। শহরটিতে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, পর্যটন এবং মৎস্য শিল্প উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। ২০১৬ সালে এর আউটপুট ছিল ৪৩.৫ বিলিয়ন ডলার।
জনসংখ্যা ও ভাষা:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, বিশাখাপত্তনমের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৭ লক্ষ। তেলুগু এখানকার প্রধান ভাষা। তবে তামিল, মালেয়ালি, উর্দু, হিন্দি, ওড়িয়া সহ অন্যান্য ভাষাভাষী মানুষের ও উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে।
পর্যটন:
বিশাখাপত্তনম একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। সুন্দর সমুদ্রসৈকত, প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলি এটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
প্রশাসন:
বিশাখাপত্তনম একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে বিকাশ লাভ করছে এবং শহর নিরাপত্তা, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জনসেবার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চলছে।
উপসংহার:
বিশাখাপত্তনম ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর, যার ঐতিহাসিক গুরুত্ব, অর্থনৈতিক বিকাশ এবং পর্যটন গুরুত্ব অসাধারণ। এটি অন্ধ্রপ্রদেশের একটি গর্ব ও ভারতের উন্নয়নের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।