বায়তুল মোকাররম

বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম: ঐতিহ্য ও স্থাপত্যের এক অপরূপ সমন্বয়

ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পল্টনে অবস্থিত বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী মসজিদগুলির মধ্যে অন্যতম। ১৯৬০ সালের ২৭ জানুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুল লতিফ ইব্রাহিম বাওয়ানি এবং তার ভাতিজা ইয়াহিয়া বাওয়ানির উদ্যোগে ‘বায়তুল মুকাররম মসজিদ সোসাইটি’র মাধ্যমে এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সিন্ধুর বিশিষ্ট স্থপতি আব্দুল হুসেন থারিয়ানি এর নকশা করেছিলেন। ১৯৬৮ সালে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় এবং ২৫ জানুয়ারি ১৯৬৩ সালে প্রথম নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। মুঘল স্থাপত্যশৈলীর ঐতিহ্যগত বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শনও রয়েছে। মক্কাতে অবস্থিত পবিত্র কাবাঘরের অনুরূপে তৈরিকৃত বায়তুল মোকাররমের বৃহৎ ঘনক্ষেত্রটি একে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছে। মসজিদের প্রধান ভবনটি আট তলা এবং ৩০.১৮ মিটার বা ৯৯ ফুট উঁচু। মূল নকশা অনুযায়ী, মসজিদের প্রধান প্রবেশপথ পূর্ব দিকে। মসজিদটিতে একসাথে ৪০,০০০ এর বেশি মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে। এর নিচতলায় বিপণিবিতান ও একটি বৃহত্তর মার্কেট কমপ্লেক্স রয়েছে। ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এই মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। ২০০৮ সালে সৌদি সরকারের অর্থায়নে মসজিদটি সম্প্রসারিত হয়।

বায়তুল মোকাররম শুধুমাত্র একটি মসজিদ নয়, এটি বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজে এবং বিশেষ দিনগুলিতে হাজার হাজার মানুষ এখানে একত্রিত হয়। অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটকও এই মসজিদটি দেখতে আসেন। এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনা এবং দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত।

মূল তথ্যাবলী:

  • বায়তুল মোকাররম বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ
  • ১৯৬০ সালে নির্মাণ কাজ শুরু
  • ১৯৬৮ সালে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন
  • ৪০,০০০ এর অধিক মুসল্লি ধারণক্ষমতা
  • মুঘল ও আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয়
  • ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ