বাহুবলী

আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
নামান্তরে:
বাহুবলি
গোমতেশ্বর
বাহুবলী

বাহুবলী: জৈন ধর্মের এক মহান ব্যক্তিত্ব ও বিশাল মূর্তির আদর্শ

প্রথম জৈন তীর্থঙ্কর ঋষভদেবের পুত্র এবং চক্রবর্তী ভরতের ভ্রাতা বাহুবলী জৈন ধর্মে এক অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। জৈন কালচক্রের ‘অবসরপনি’ যুগে তিনি বর্তমান ছিলেন। জৈন ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, বাহুবলী তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ভরতের সাথে অহিংস দ্বন্দ্বযুদ্ধে জয়লাভ করার পর সন্ন্যাস গ্রহণের ইচ্ছা পোষণ করেন। তিনি তার রাজ্য ভরতকে দান করে দিগম্বর সন্ন্যাসী হন এবং এক বছর কায়োৎসর্গ ভঙ্গিমায় স্থির থেকে ধ্যান করেন। এক বছর ধ্যানের পর তিনি কেবল জ্ঞান (সর্বজ্ঞতা) প্রাপ্ত হন এবং একজন অরিহন্তে পরিণত হন। জৈন ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, বাহুবলী কৈলাস পর্বতে মোক্ষ লাভ করে একজন সিদ্ধে পরিণত হন।

বাহুবলীর অপর নাম গোমতেশ্বর। গঙ্গ রাজবংশের মন্ত্রী ও সেনাপতি চামুণ্ডারায় কর্তৃক নির্মিত তার ৫৭ ফুট উঁচু একশিলা মূর্তি কর্ণাটকের হাসান জেলার শ্রবণবেলগোলায় অবস্থিত। ৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এই মূর্তি বিশ্বের বৃহত্তম বিনা-সহায়তায় দণ্ডায়মান মূর্তিগুলির অন্যতম। ২০০৭ সালের ৫ অগস্ট, এটি ভারতের সাত আশ্চর্যের তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে। প্রতি বারো বছরে একবার এখানে মহামস্তকাভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

১০ম শতাব্দীতে আদিকবি পম্পা রচিত ‘আদিপুরাণ’ গ্রন্থে প্রথম তীর্থঙ্কর ঋষভ এবং তার দুই পুত্র ভরত ও বাহুবলীর দশটি জীবনের কথা উল্লেখ আছে। জৈন ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী, ঋষভদেব সন্ন্যাস গ্রহণের সময় জ্যেষ্ঠ পুত্র ভরতকে রাজ্য দান করেন এবং কনিষ্ঠ পুত্র বাহুবলীকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী নির্বাচিত করেন। ভরত ও বাহুবলীর মধ্যে তিন ধরনের দ্বন্দ্বযুদ্ধ হয়: চক্ষুযুদ্ধ, জলযুদ্ধ ও মল্লযুদ্ধ। বাহুবলী সব যুদ্ধে জয়লাভ করেন। যুদ্ধের পর মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে বাহুবলী সন্ন্যাস গ্রহণ করেন এবং কেবল জ্ঞান অর্জনের জন্য ধ্যান শুরু করেন।

ভারতের বিভিন্ন স্থানে ২০ ফুটের বেশি উচ্চতার বাহুবলীর একাধিক একশিলা মূর্তি রয়েছে, যেমন কর্ণাটকের শ্রবণবেলগোলা, কারকল, ধর্মস্থল, গোমাতাগিরি, মহারাষ্ট্রের কুম্ভোজ, মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর এবং আরও অনেক স্থানে। এই মূর্তিগুলি জৈনদের কাছে তীর্থস্থান হিসেবে বিখ্যাত। শ্রবণবেলগোলায় অবস্থিত গোমতেশ্বর মূর্তি বিশ্বের বৃহত্তম একশিলা মূর্তিগুলির মধ্যে একটি।

মূল তথ্যাবলী:

  • বাহুবলী প্রথম জৈন তীর্থঙ্কর ঋষভদেবের পুত্র।
  • তিনি জৈন ধর্মের এক সম্মানিত ব্যক্তিত্ব।
  • তার ৫৭ ফুট উঁচু একশিলা মূর্তি বিশ্ববিখ্যাত।
  • শ্রবণবেলগোলায় অবস্থিত মূর্তিটি প্রতি ১২ বছর অন্তর মহামস্তকাভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
  • বাহুবলীর একাধিক একশিলা মূর্তি ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।